বুধবার , ডিসেম্বর ২৫ ২০২৪

ফসলের ২০-৩০%  নষ্ট করে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ 

নিজস্ব প্রতিবেক: ফসল উৎপাদনে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ২০-৩০% ফসল নষ্ট করে। এছাড়া, বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিশ্বব্যাপী কীটপতঙ্গের দ্রুত বিস্তার ঘটছে। এ অবস্থায়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উদ্ভূত কীটপতঙ্গের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ রাখার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি কমানোর প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করার তাগিদ দিয়েছেন কৃষি  বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর অডিটরিয়ামে ‘পাঁচ দশকে কীটতাত্ত্বিক গবেষণা ও উন্নয়ন এবং উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তাগিদ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ কীটতত্ত্ব সমিতি সম্মেলনটি আয়োজন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার।

বাংলাদেশ কীটতত্ত্ব সমিতির সাবেক সভাপতি এবং  আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ড. সৈয়দ নুরুল আলম সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়, পরিবেশ দূষিত ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয় এবং কীটনাশক রেজিস্ট্যান্টস হয়।

প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশে কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়। তবে বর্তমান সরকারের পদক্ষেপের কারণে যথেচ্ছ ব্যবহারের পরিমাণ কমছে। ২০০৯-১০ এর তুলনায় ২০২১-২২ সালে ১৯% কীটনাশক কম ব্যবহার হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার তাঁর বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত উদ্ভূত কীটপতঙ্গের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ রাখার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি কমানোর প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করার জন্য কীটতত্ত্ববিদদের আহ্বান জানান।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে বিশ্বব্যাপী কীটপতঙ্গের দ্রুত বিস্তার ঘটছে। কৃষকেরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কীটপতঙ্গের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। কীটপতঙ্গ আক্রমণের বিস্তারণের জন্য বর্তমানে বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পতিত। এ পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি হ্রাস করতে কার্যকর পরিবেশবান্ধব বালাই ব্যবস্থাপনা উদ্ভাবন ও বাস্তবায়নের উপর সম্মেলনে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। সেই সাথে শিল্পোন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট কীটপতঙ্গের সংরক্ষণ, বংশবৃদ্ধি ও মাঠ পর্যায়ে ব্যবহার জোরদার করা আবশ্যক।

অনুষ্ঠানে সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোঃ রুহুল আমীন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। ভারতের বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদগণ আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে সম্মেলনে ৪টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সম্মেলনে কারিগরি সেশনে বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নবীন ও প্রবীণ বিজ্ঞানীবৃন্দ এবং অন্যান্য পাবলিক ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 1871 times!

Check Also

আমন ধানে ব্রাউন প্ল্যান্ট হপার আক্রমণ: ফলনের ক্ষতি ও করণীয়

ড. মো. মাহফুজ আলম: বাংলাদেশে ধান প্রধান ফসল হিসেবে পরিচিত এবং এর উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির …