বৃহস্পতিবার , নভেম্বর ২১ ২০২৪

সাতক্ষীরায় বাগদা চিংড়ি চাষীদের নিয়ে এসিআই- এর দিনব্যাপী কর্মশালা

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় সুপার স্পেসিফিক প্যাথোজেন ফ্রি (এসপিএফ) ব্ল্যাক টাইগার চিংড়ি (বিটিএস) নার্সারি ও কন্ট্রাক্ট ফার্মিং-এর সূচনা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। (১১ মার্চ) সোমবার বেলা ১০টায় উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে এসিআই এগ্রোলিংক আয়োজিত সাস্টেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিসারিজ প্রজেক্ট এর এই কর্মশালা দিন ব্যাপি অনু‌ষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, খুলনা বিভাগের সাস্টেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিসারিজ প্রজেক্ট (এসসিএমএফপি)- এর উপ-পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রি, উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসিআই এগ্রোলিংক-এর জেনারেল ম্যানেজার শোয়েব মাহমুদ এবং এসিআই এর সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট এর পক্ষ থেকে এসিআই এবং  এসপিএফ-বিটিএস নার্সারি ও কন্ট্রাক্ট ফার্মিং নিয়ে বক্তব্য রাখেন এসিআই এগ্রিবিজনেস এর প্রোগ্রাম হেড হাসিবুল মান্নান।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা সাতক্ষীরা, যেখানকার গ্রামীণ বাসিন্দাদের জীবিকা নির্বাহে চিংড়ি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় এসিআই এগ্রোলিংক একটি সুপার এসপিএফ (স্পেসিফিক প্যাথোজেন ফ্রি) পি এল (পোস্ট লার্ভা) নার্সারি স্থাপনা করে। যেখানে ১০ – ১২ দিনের এসপিএফ পোনা সংগ্রহ করে ৫–৮ দিন নার্সিং করা হবে। এসপিএফ পোনা হলো নির্দিষ্ট ভাইরাসমুক্ত পোনা।

এই নার্সারী থেকে চিংড়ি চাষীরা সুপার এসপিএফ পোনা পাবে যা চিংড়ির রোগ কমাতে, চিংড়ির মৃত্যুহার কমাতে এবং চিংড়ির ভালো উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। ফলস্বরূপ, চাষীর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং এসিআই এগ্রোলিংক চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প হিসাবে অতিরিক্ত কাঁচামালের যোগান পাবে, যার ফলে উচ্চ রপ্তানি আয় হবে। এবং এই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

কর্মশালায় উপস্থিত খুলনা বিভাগের সাস্টেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিসারিজ প্রজেক্ট (এসসিএমএফপি) – এর উপ-পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রি মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চিংড়ি সেক্টরে এসিআই এর এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে সাধুবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান এবং একইসাথে নিবেদন করেছেন মানসম্মত এসপিএফ পোনা সরবরাহ করে এসিআই যেন চাষিদের আস্থার জায়গা তৈরি হয় এবং রোল মডেল হিসেবে কাজ করে যা অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে চিংড়ি সেক্টরে এগিয়ে আসার জন্য।

তিনি চিংড়ি চাষিদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল চিংড়ি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত হওয়া স্বত্ত্বেও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এর মূল কারণ হলো সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করা। সে ক্ষেত্রে তিনি চাষিদের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের আহ্বান জানান। যেখানে চারটি প্রধান বিষয় চাষিদের মেনে চলতে হবে ১) ভাইরাস মুক্ত পোনা (এসপিএফ পোনা) ২) ঘেরের গভীরতা বৃদ্ধি ৩) ভালো খাবার প্রদান এবং ৪) জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

উল্লেখ্য, এই কর্মশালায় এসিআই  এগ্রোলিংক এর অপারেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন,  এগ্রিবিজনেস এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড সার্টিফিকেশন সৈয়দা সোনিয়া রহমান, এসিআই এনিমেল হেলথ এর এরিয়া সেলস এক্সিকিউটিভ সুমন কুমার দে, এসপিএফ-বিটিএস নার্সারি ও কন্ট্রাক্ট ফার্মিং প্রকল্পের সহকারি প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরিফা পারভিন সোহানী সহ কালিগঞ্জ উপজেলার শতাধিক চিংড়ি চাষী, এজেন্ট এবং ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 1662 times!

Check Also

যে জেলায় ইলিশ উৎপাদন হয়, ওই জেলার মানুষ গরিব হতে পারে না -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ভোলা সংবাদদাতা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশের সম্পদ রক্ষায় সবাইকে একসাথে কাজ …