বিধান চন্দ্র রায় (নীলফামারী) : নীলফামারীর জলঢাকায় বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ বেড়েছে প্রান্তিক কৃষকদের।কম খরচে বেশি আয়ের আশায় পতিত জমিতে আদা চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। বাড়ির আঙিনা, ছাদ, অনাবাদি ও পতিত জমিসহ বিভিন্ন জায়গায় বস্তায় মাটি ভরে কিংবা টবে আদা চাষ করা হচ্ছে। এতে আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,জলঢাকা উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ২৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন এই এলাকার কৃষকরা।সেখান থেকে প্রায় ৪৫ টন আদা উৎপন্ন হবে বলে আশা করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম, গোলমুন্ডা, কৈমারী,গোলনা ইউনিয়নসহ পৌরসভার অনেক কৃষক বাড়ির আশপাশে বস্তায় আদার চাষ করেছেন। এদের মধ্যে বালাগ্রাম ইউনিয়নের শুরীরমোড়ের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, এই প্রথম গাছ বাগানের মাঝে বস্তায় আদা চাষ করেছি। মাটির সঙ্গে গোবর সার, খৈল, ছাই, জিংক মিশিয়ে ৫০০ বস্তা মাটি প্রস্তত করেছি। ৩৫০ টাকা কেজি দরে ৩৫ কেজি বীজ আদা সংগ্রহ করে গত এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে আদার কন্দগুলো রোপণ করি বস্তার মাটিতে।এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্র ১৬ হাজার টাকা। এলাকার বিভিন্ন মানুষ বস্তায় আদা চাষ দেখতে আসছেন। কেউ কেউ এ পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। সফলতা পেলে ভবিষ্যতে আদা চাষের পরিধি বাড়াব।
পৌরসভার বটতলি কালিমন্দির এলাকার স্কুল শিক্ষিকা প্রতিমা রায় জানান,বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি নিজের ছাদবাগানের মাঝে ৫০ টি বস্তায় আদা চাষ করেছেন।এতে নিজের পরিবারের চাহিদা যেমন মিটবে তেমনি বাহির দেশ থেকে আদার আমদানি করতে হবে না বলে মনে করেন।
বালাগ্রাম ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আঃ হারিক জানান, আদা প্রাকৃতিক ঔষধি গুণাগুণে ভরপুর। আদা লাগানোর ৯-১০ মাসের মধ্যে উত্তোলন করা যায়। একটি বস্তায় ৩০ গ্রাম করে ৩টি আদার বীজ রোপণ করে অন্তত ২ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। পতিত ও গাছের তলা এমনকি বাঁশতলার নিচে বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
জলঢাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ জানান,বস্তায় আদা চাষে খরচ বেশি নেই। আমরা কৃষককে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি, কারিগরি সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে ভালো মানের বীজ সংগ্রহে সহায়তা করছি। বস্তায় আদা চাষ করলে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কৃষক বাড়তি আয়ও করতে পারবে।