ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া পাওয়া পরিশোধসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের নেতারা। সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব দাবির তুলে ধরেন পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খোদা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান পরিবর্তিত রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষাপটে নাগরিক পরিষদ মনে করছে পাটকল চালুর দাবিতে এখন আরো সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। সে লক্ষে নাগরিক পরিষদের পক্ষ থেকে বর্তমান বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নাগরিক পরিষদের সাথে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। নাগরিক পরিষদের প্রতিনিধিরা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে নিয়ে গত ২৭ আগস্ট উপদেষ্টার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে সমস্ত তথ্য ও উপাত্তসহ শ্রমিক- নাগরিকদের ৯ দফা দাবি পেশ করেন। অবিলম্বে এসব দাবি মেনে নেবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। উপদেষ্টা আমাদের সেই আশ্বাস দিয়েছেন।
নাগরিক পরিষদের ৯ দফা দাবি হচ্ছে :
১. সকল রাস্ট্রায়ত্ত্ব পাটকল রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু করতে হবে। এক্ষেত্রে তৎকালীন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এর প্রস্তাবনা অনুযায়ী সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকায় শ্রমিক বিদায় নয়, ১২’শ কোটি টাকা ব্যয় করে মিলসমূহ আধুনিকায়নের প্রস্তাবটি বিবেচনা করতে হবে।
২. দ্রুত সময়ের মধ্যে উল্লেখিত ৫ টি মিলের শ্রমিকদের বকেয়া পাওনাসহ ২০১৫ সালের মজুরি কমিশন অনুযায়ী ৯টি উৎসব বোনাসের ডিফারেন্স বা বর্ধিত অংশ ২০২০ সালের ঈদুল আযহার বোনাস, ৩ টি বকেয়া বৈশাখী ভাতা, সাপ্তাহিক ৪৮ ঘন্টার অধিক হাজিরার এরিয়ার বিল প্রদান করতে হবে। মিল চালু থাকায় ১ ও ২ জুলাই ২০২৯ এর এর ইনক্রিমেন্টসহ সকল বেতন ও পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে।
৩. মাথাভারী প্রশাসন ও দুর্নীতিযুক্ত বিজেএমসির সংস্কার করাসহ তৎকালীন মন্ত্রী সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
৪. ইতিমধ্যে যে সকল রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকল লিজ দেওয়া হয়েছে সেগুলো বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৫. ২০১০ সালের ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং এ্যাক্ট কার্যকর করতে হবে।
৬. কাঁচা পাট সরাসরি রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করতে হবে।
৭. ব্যক্তি মালিকানাধীন পাটকল শ্রমিকদের চাকুরী স্থায়ীকরণ, শিশু শ্রম, নিয়োগ বন্ধ এবং দৈনিক নূন্যতম মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
৮.আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মিল কর্তৃক যে সকল ফৌজদারি মামলা রয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। সাথে সাথে শ্রমিকেরা তাদের পাওনা পরিশোধের জন্য মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যে সকল মামলা করেছেন অনতিবিলম্বে সেগুলি নিষ্পত্তি করে তাদের পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে।
৯. খুলনায় আন্দোলন চলাকালীন শ্রমিক ও নাগরিক নেতৃবৃন্দের নামে দায়কৃত মিথ্যা মামলা (খান জাহান আলী থানা, মামলা নং ১০/ তাং ১৯/১০/২০২০ ও মামলা নং ৫। তাং ৪/৪/২০১৯ দৌলতপুর থানা ৩৯৪ পেন্ডিং মিসকেস) প্রত্যাহার করতে হবে।