নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী- ভূপৃষ্ঠে সবচেয়ে প্রভাবশালী ও সভ্যতা নির্মাণকারী হলেও প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিনাশ মানুষের বেঁচে থাকার পরিবেশকেই ধ্বংস করে দিচ্ছে। মানবিক ও প্রাণবিক বিষয়গুলো আমরা এক করে ফেলছি। প্রাণী রক্ষায় আমাদের আরো মানবিক হতে হবে, এক্ষেত্রে মানুষ আর প্রাণীর বিভাজন নয়। আসুন না, একটু মানবিক হই”।
আজ (রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি)-তে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২৪ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর ও USAID One Health Activity এর সম্মিলিত আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন ।
বিভিন্ন সেক্টরের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানো আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেছেন “ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ” থেকে “ওয়ান লাইফ অ্যাপ্রোচ” এ পরিবর্তন করতে চাই যেখানে মানবিক উন্নয়ন ও সুস্থতা, প্রাণিজীবনের সংরক্ষণ,পরিবেশের ভারসাম্য,সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা,সামগ্রিক জীবনধারা ও দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে। এক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়,স্হানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় একসাথে কাজ করতে পারে।
তিনি বলেছেন ,জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রদানের ফলে জলাতঙ্কের হার পূর্বের তুলনায় কমলেও অসচেতনতা, ভৌগোলিক অবস্থান, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ ও ভ্রান্ত ধারণার জন্য দেশে জলাতঙ্কের ঝুঁকি এখনও বিদ্যমান। তাই সচেতনতা বৃদ্ধি, কুসংস্কার দূরীকরণ ও মানুষের আচরণ পরিবর্তনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ খুবই জরুরি। একই সাথে পোষা ও বেওয়ারিশ কুকুর-বেড়ালকে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রয়াস জলাতঙ্ক নির্মূলে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরো বলেছেন , টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে জলাতঙ্কমুক্ত বিশ্ব গড়তে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে । বৈশ্বিক উদ্যোগের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশও ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
“Breaking Rabies Boundaries” (জলাতঙ্ক নির্মূলে প্রয়োজন সব প্রতিবন্ধকতা নিরসন) এ প্রতিপাদ্য ধারণ করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচির শুরুতে জলাতঙ্ক সচেতনতাবিষয়ক একটি শোভাযাত্রা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে শুরু হয়ে খামারবাড়ি মোড়ে এসে শেষ হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্যদপ্তর, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী জলাতঙ্কের ওপর বিভিন্ন সচেতনামূলক লেখাযুক্ত প্ল্যাকার্ড, পোস্টার ও ব্যানার হাতে নিয়ে শোভাযাত্রা প্রদক্ষিণ করেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: মোহাম্মদ রেয়াজুল হক এর সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন USAID One Health Activity এর Animal Health Team Lead প্রফেসর পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা: শেখ ছাইদুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা: মো: বয়জার রহমান সহ অন্যরা এ সময় বক্তব্য রাখেন ।