শনিবার , ডিসেম্বর ২১ ২০২৪

গ্রামে ৫০০ তালবীজ রোপণ করলেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম

বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও পরিবেশ আন্দোলনকে গুরুত্ব দিয়ে এবং ব্জ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে নিজ গ্রামে পাঁচশত তালবীজ রোপন করলেন পরিবেশ, ভ্রমণ ও এ্যাভিয়েশন বিষয়ক কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম। নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার দশানী টবগা গ্রামে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুইদিনব্যাপী তালবীজ রোপন কার্যক্রম শেষ হয় শনিবার (২ নভেম্বর)। এই কার্যক্রম সম্পাদনে সহযোগী হিসেবে ছিল মিশন গ্রিন বাংলাদেশ।

তালবীজ রোপনের উদ্যোক্তা পরিবেশ কর্মী ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম বলেন, আমাদের দেশে বর্তমান সময়ে বজ্রপাতে মারা যাওয়ার সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। মানুষের পাশাপাশি প্রতি বছর অনেক গবাদি পশু মারা যায় এ বজ্রপাতে। তাল গাছ এসব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারে বলে এমন উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মতো আপনারাও তালের সময়ে তাল খেয়ে সেই বীজ বসতভিটার আশেপাশে অথবা রাস্তার ধারে রোপণ করুন কিংবা সেই বীজ তুলে দিন আমাদের হাতে। আসুন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় ও বজ্রপাত থেকে বাঁচতে তালের বীজ রোপণ করি এবং নিজ চারপাশকে আরও একটু সবুজ করি’।

তালবীজ রোপন করা প্রসঙ্গে মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহ্বায়ক আহসান রনি বলেন, ‘সারা দেশকে আমরা সবুজ করতে চাই। দেশ সবুজ হলে অনেকাংশে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিই শুধু কমবে না বরং আমাদের দেশ ফিরে পাবে তার হারানো রূপ। আমরা ফিরে পাব সবুজ, শ্যামল বাংলাদেশ। এছাড়াও আমরা বুকভরে নিতে পারব নির্মল বাতাস।‘

গ্রামের বাসিন্দা ও সরল অংক বইয়ের লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস অনি রাস্তার দুধারে তালবীজ লাগানো প্রসঙ্গে বলেন ‘মাটির ক্ষয়রোধ, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি ঘরের খুঁটি ও হাতপাখা তৈরিতে তালগাছের ব্যবহার হয়ে আসছে শত বছর ধরে। তালপাতার পাখা আমাদের বাঙ্গালী জাতির ঐতিহ্যের একটি অংশ। তাল গাছের ডালের আঁশ থেকে রকমারি দ্রব্যাদি প্রস্তুত হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তালগাছের সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে তাই আমাদেরকে প্রচুর পরিমানে তালবীজ রোপন করতে হবে যাতে করে প্রকৃতি ঠিক থাকে।’

প্রসংগত, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে প্রতি বছর উষ্ণতা বাড়ছে। পৃথিবী বিশেষ করে গত কয়েক বছরে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ উষ্ণায়নের ফলে প্রতিনিয়ত কঠিন হয়ে পড়ছে মানুষের বসবাস। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় পৃথিবী ব্যাপী নানান পদক্ষেপ বা কর্মসূচী লক্ষণীয় হলেও দেশে সেটা অপ্রতুল। ঝুঁকি মোকাবেলায় পরিবেশবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞগণ বৃক্ষরোপনের উপর বেশ গুরুত্ব দিচ্ছেন। এছাড়াও গত কয়েক বছরে দেশব্যাপী বজ্রপাতের ফলে প্রাণহানির ঘটনা হু হু করে বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতি বৃক্ষরোপনে বিশেষ তালগাছ লাগানোর উপর জোর দিচ্ছে বৃক্ষপ্রেমী ও পরিবেশকর্মীরা।

This post has already been read 6373 times!

Check Also

পরিবেশ সুরক্ষা ও পানি সাশ্রয়ে এডব্লিউডি সেচ পদ্ধতি

ড. এম আব্দুল মোমিন: ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য। আউশ, আমন  বোরো মৌসুমে আমাদের দেশে ধান …