আসাদুল্লাহ (বরিশাল) : ফরিদপুরে প্রতি বছর আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করা হয়। এবারও ফরিদপুরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।
সারা দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৬ থেকে ২০ শতাংশ ফরিদপুর জেলাতে হয়ে থাকে। এই জেলায় প্রতি মৌসুমে মুড়িকাটা ও হালি এই দুই জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়। এর মধ্যে আগাম জাত মুড়িকাটা। এবারও জেলা সদরসহ সব উপজেলাতে এ জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে ফলন তোলা যায়।
চাষিরা জানান, অতিবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ আবাদ পিছিয়ে গেছে। অনুকূল আবহওয়া ও ফলন ভালো হলে লাভবান হবেন তারা।
সরেজমিনে জেলার সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের কামারডাঙ্গী এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম কৃষকে পরামর্শ দিতেছেন। দুই সপ্তাহ আগে রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ পরিচর্যায় মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কেউ জমিতে নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউ কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। অতিবৃষ্টির কারণে যাদের জমিতে পানি জমেছিলো তারা কিছুদিন দেড়িতে পেঁয়াজ রোপণ করছেন।
সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের কামারডাঙ্গী এলাকার কৃষক মো. মাজেদ মিয়া বলেন, ৩ বিঘা(৩৩ শতাংশে ১ বিঘা) জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করেছি। এ বছর পেঁয়াজ আবাদে প্রচুর খরচ। এক বিঘা জমিতে ৬ মণ পেঁয়াজ লাগে। এক মণ পেঁয়াজের দাম ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। আমার তিন বিঘা জমিতে প্রায় ১ লক্ষ টাকার বেশি পেঁয়াজ কন্দ কিনতে হয়েছে। এরপর সার, কীটনাশক, শ্রমিক খরচ দিয়ে সব মিলিয়ে ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হলে তিন বিঘা জমিতে ২০০ মণ পেঁয়াজ হবে। বাজারে দাম থাকলে লাভবান হবো আশা করছি।
আরেক চাষি আলিম সরদার বলেন, এ বছর পেঁয়াজ বীজ, জমি চাষ, সার, সেচ ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় ঘরে উঠানো পর্যন্ত বিঘাপ্রতি মুড়িকাটা পেঁয়াজে খরচ পড়বে ৮০-৯০ হাজার টাকা আর বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদন হবে ৬০-৭০ মণ। পেঁয়াজ গাছের বয়স ২০ দিন চলছে। আগামী দুই মাস পর এই পেঁয়াজ ঘরে তোলা যাবে।
ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. রইচ উদ্দিন বলেন, এ বছর জেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শত হেক্টর। অতিবৃষ্টিতে আবাদ পিছিয়ে যাওয়ায় এখনো কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছে। এ বছরও কৃষকেরা মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে লাভবান হবে।