বুধবার , ডিসেম্বর ১৮ ২০২৪

উৎপাদন বাড়াতে খাদ্যকে অনিরাপদ করা যাবে না -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ  উপদেষ্টা

কক্সবাজার সংবাদদাতা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেছেন, উৎপাদন বাড়াতে সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু উৎপাদন বাড়াতে খাদ্যকে অনিরাপদ করা যাবে না। কিটনাশকের ব্যবহার করে খাদ্যের পুষ্টিগুন নষ্ট করা যাবে না। মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা কিংবা সুস্থ্য থাকা খুবই জরুরি।

আজ রোববার  (১৫ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজারস্হ সায়মন বিচ রিসোর্টে জেলা পর্যায়ে বহুখাতভিত্তিক পুষ্টিসেবা বাস্তবায়নের সুযোগ, অভিজ্ঞতা ও প্রতিবন্ধকতা বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা আরো বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বড় বাধা শিল্পকারখনার দূষণ। নদী-সমুদ্রেও দূষণ হচ্ছে। মাছের মধ্যেও মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে এখন জিঙ্কসমৃদ্ধ চালের কথা বলছেন। কিন্তু কারণ এটা ওভারডোজ। জিঙ্ক ঘাটতি আছে কি না তা না দেখে এই চাল খাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত। গোল্ডেন রাইসের বিরোধীতা করছি। আমাদের জিঙ্কের ঘাটতি পূরণে অনেক খাবার আছে। সেগুলোর উৎপাদন বাড়াতে হবে। পুষ্টি সচেতনতার লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, পুষ্টি মৌলিক অধিকার। এই অধিকার নিশ্চিত করতে সবাইক এক সুরে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সব দপ্তর ও সংস্থাকে একিভূত করে পুষ্টি সুরক্ষায় সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।  মৎস্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় যোগানদাতা হিসেবে আছে। কিন্তু উৎপাদন বাড়াতে কিটনাশক দিয়ে ক্ষতি করছি। দেশীয় মাছকে গুরুত্ব না দিয়ে চাষের মাছেকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ফিড নিরাপদ না মাছ নিরাপদ তা নিয়েও মাঝে মাঝে দ্বিধায় পড়তে হয়। গরুকে ঘাস খাওয়ানোর কথা, অথচ গরুরকে অন্য কিছু খাওয়ানো হচ্ছে। মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা কিংবা সুস্থ থাকা খুবই জরুরি। আমরা দেশীয় মাছ বাড়ানোর দিকে বেশি জোর দিচ্ছি। কারণ আমাদের দেশে প্রচুর বৈচিত্র আছে। একেক এলাকায় একেক রকম প্রাণিসম্পদ আছে, সবগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।

পুষ্টি সচেতনতা বাড়াতে মেয়েদের ক্ষমতায়নের ওপর জোর দিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, দেশের গর্ভবতী নারীদের প্রায় অর্ধেক রক্তস্বল্পতায় ভোগেন। নারীর অধিকারহীনতা ও নারীর অপুষ্টি একসুতায় গাঁথা। আগামী প্রজন্মের স্বার্থে নারী-পুরুষ দুজনকেই সচেতন করতে হবে। তবে নারীরাই মূখ্য। নারী ক্ষমতায়ন হলে নারী রুখে দাঁড়াতে পারে।

সমকালের অনলাইন ইনচার্জ গৌতম মণ্ডলের সঞ্চালনায় এবং নিউট্রেশন ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর সায়কা সিরাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনএনসি মহাপরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, বিএনএনসির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. আনজুমান আরা সুলতানা, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) প্রিম রিজভী, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (উপসচিব) মো. মনির হোসাইন, আমান প্রকল্পের সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী টুম্পা মনি, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন  ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদার, এএইচ৩৬০ এর কান্ট্রি ম্যানেজার জেবা মাহমুদ, ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সাইহা মার্জিয়া, কক্সবাজারের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ এম খালেকুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলার উপপরিচালক  ড. বিমল কুমার প্রামাণিক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. মহসিন আলী। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউট্রেশন ইন্টারন্যাশনালের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইফতিয়া জেরিন প্রমুখ।

This post has already been read 126 times!

Check Also

কীটনাশকের ভয়াবহতা: দেশের ৪২% কৃষক ক্যান্সারে আক্রান্ত

ফরিদপুর সংবাদদাতা :  আমরা যেসব কীটনাশক ব্যবহার করছি সেটাতে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি দেখা চাচ্ছে। আমাদের …