নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): পটুয়াখালীতে বরিশাল অঞ্চলে বিনা উদ্ভাবিত জাত বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে অন্তর্ভুক্তিকরণ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) টিএসসি কনফারেন্স রুমে পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ( বিনা) উদ্যোগে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন পবিপ্রবির উপাচার্য ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সিকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিপ্রবির উপ-উপাচার্য ড. এসএম হেমায়েত জাহান, বিনার গবেষণা কর্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ আশিকুর রহমান। বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিপ্রবির প্রফেসর ড. আলমগীর কবীর, ডিএই ঝালকাঠির উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম, পটুয়াখালীর উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, বিনার উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল আকতার, ডিএই বরিশালের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোসাম্মৎ মরিয়ম, পটুয়াখালীর জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো.খায়রুল ইসলাম মল্লিক, সিমিট বাংলাদেশের বরিশাল অঞ্চলের প্রধান হীরা লাল নাথ, পার্টনার প্রকল্পের সিনিয়র অফিসার মোসা. ফাহিমা হক, বাকেরগঞ্জের উপজেলা কৃষি অফিসার সুনীতি কুমার সাহা, গলাচিপার উপজেলা কৃষি অফিসার আরজু আক্তার, বাকেরগঞ্জ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রুবেল, বাবুগঞ্জ কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের সভাপতি রিতা ব্রহ্ম প্রমুখ। কর্মশালায় সরকারি-বেসরকারি কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং কৃষক মিলে দুইশতাধিক আংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি বলেন, পরিবর্তিত জলবায়ুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলে ফসল উৎপাদনে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিনা উদ্ভাবিত জাত এবং প্রযুক্তির ব্যবহার যথেষ্ঠ উপযোগী। তাই এ অঞ্চলের শস্যবিন্যাসে এসব প্রযুক্তিগুলো অন্তর্ভুক্তিকরণ জরুরি। আর তা মাঠে সম্প্রসারিত হলে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এতে চাষে কৃষকদেও আগ্রহ বাড়বে। পাশাপাশি তারা আর্থিকভাবেও হবেন লাভবান।
উল্লেখ্য, পরমাণুশক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য বিনা ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফসলের জাত উন্মুক্ত করেছে। বিনা উদ্ভাবিত ২১ ফসলের ১৩৪ টি জাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ধান, সরিষা, তিল, গম, চিনাবাদাম, সয়াবিন, খেসারী, মুগ, পাট, লেবু, টমেটো এবং সফেদা। দক্ষিণাঞ্চলের জন্যে উপযোগী জাতগুলো হলো- আমনের ক্ষেত্রে বিনাধান-১৭, বিনাধান-২০, বিনাধান-২৩। বোরোতে বিনাধান-১০, বিনাধান-২৫ এবং খরিফের জন্য বিনাধান -১৯। অন্যান্য ফসলের মধ্যে বিনাসরিষা-৯, বিনামুগ-৮, বিনাসয়াবিন-৪, বিনাতিল-৪, বিনা চিনাবাদাম-৪ অন্যতম। তাই দক্ষিণাঞ্চের মাঠে এর ব্যবহার অত্যাবশ্যক। আর তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কৃষকের মাঝে বীজ বিতরণ, প্রদর্শনী, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, মাঠ দিবস, কৃষি প্রযুক্তি পল্লী স্থাপনসহ বিভিন্ন প্রচারণা অব্যাহত আছে। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিকূল পরিবেশেও ফসলের উৎপাদন আশানুরুপ হবে।