চবি সংবাদদাতা: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস বাংলাদেশের সমুদ্রবিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার অগ্রণী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপরিচিত, যা দীর্ঘ ৫০ বছরের গৌরবময় যাত্রায় অসংখ্য সাফল্যের মাইলফলক অর্জন করেছে। ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি এক অনন্য ঐতিহ্য গড়ে তুলেছে, যা কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত।
গতকাল শনিবার (১১ জানুয়ারি) এই ঐতিহাসিক দিনে ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছে। দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি ও আনন্দ আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠান স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে। উদ্যাপন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ আফতাব উদ্দিন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, জার্মানিয়া হোল্ডিংস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব সোহেল ইবনে সাত্তার এবং মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: শাহাদাত হোসেন।
সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এরপর কেক কেটে উদ্যাপন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষক এবং সমুদ্রবিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী ও বিশিষ্ট অতিথিরা অংশগ্রহণ করেন।
এই বিশেষ দিনটি আরও বর্ণময় হয়েছে বিভিন্ন আলোচনাসভা, স্মৃতিচারণ এবং সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ইনস্টিটিউটের অর্জন, তাদের অভিজ্ঞতা ও পেশাগত সাফল্যের গল্প ভাগাভাগি করেছেন। পাশাপাশি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করা হয়েছে।
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি বিশেষ স্মারক প্রকাশিত হয়েছে। এতে স্থান পেয়েছে ইনস্টিটিউটের গৌরবময় ইতিহাস, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের লেখনী, যা ইনস্টিটিউটের প্রতি তাদের ভালোবাসা এবং অন্তর্ভুক্তির চিত্র তুলে ধরে। এই স্মরণিকায় ইনস্টিটিউটের গর্বিত সাফল্য ও ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি হিসেবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছবি সংযোজন করা হয়েছে।
দিনব্যাপী অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে ছিল ইনস্টিটিউটের ইতিহাস নিয়ে একটি বিশেষ ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী। এ ডকুমেন্টারি দর্শকদের চোখে তুলে ধরেছে ইনস্টিটিউটের সাফল্যের ধারা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দিক। দুপুরে ইনস্টিটিউটের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এক মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় দেশবরেণ্য ব্যান্ড শিল্পীদের অংশগ্রহণে একটি সংগীতানুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, যা উদ্যাপনকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যায়।
সুবর্ণজয়ন্তীর এই বিশেষ আয়োজনে ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস আবারও তার ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নতুন উদ্দীপনায় সমুদ্রবিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার পথে অগ্রসর হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।