কৃষিবিদ মো. খালেদীন আনাম (পাবনা) : কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাকির হোসেন বলেছেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে পাবনা জেলা প্রথম। পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনে ভালো জাতকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। পেঁয়াজ চাষাবাদে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে শুধু শীতকালে আবাদ যোগ্য পেঁয়াজের বীজ বা কন্দ উৎপাদন করলেই চলবে না। গ্রীষ্মকালে আবাদ যোগ্য বীজ ও খাদ্যোপযোগী পেঁয়াজ উৎপাদন করতে হবে। বছরে পেঁয়াজ উৎপাদনে প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন বীজের প্রয়োজন হয়। এর চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে বেশি দামে আমদানী করতে হয়। নিজেরা চাষ করে বীজ উৎপাদন করতে পারলে কম দামে এবং গুণগত মানসম্পন্ন বীজ পাওয়া সম্ভব।
গত ২৪ জানুয়ারি পাবনা জেলায় পেঁয়াজ বীজ ও কন্দ উৎপাদনকারী চাষীদের নিয়ে উঠান বৈঠক ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক বেড়া উপজেলার পুরান মাসুমদিয়া ও সুজানগর উপজেলার হুদারপাড়া গ্রামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, পেঁয়াজ উৎপাদন করে সব পেঁয়াজ খেয়ে বা বিক্রি করলেই চলবে না। আগামী মৌসুমে চাষের জন্য বাছাই করে ভালো মানের কন্দ দেশীয় পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে। পেঁয়াজ পচনশীল কৃষি পণ্য হওয়ায় সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে এক তৃতীয়াংশ পেঁয়াজ পঁচে যায়। মাত্র ৮০ হাজার টাকা খরচে ক্ষুদ্র আকারে চাষী পর্যায়ে পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার তৈরি করলে ৩০০ মন পর্যন্ত পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা সম্ভব। পেঁয়াজ সংরক্ষণে সুষম সারের ব্যবহারের পাশাপাশি জৈব সার ও বালাইনাশক প্রয়োগের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। উঠান বৈঠকে পেঁয়াজ চাষাবাদে বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানের ফলপ্রসু আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ ড. মো. জামাল উদ্দীন, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনা। কৃষিবিদ নুসরাত কবীর, উপজেলা কৃষি অফিসার বেড়া পাবনা এর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মো. ইসমাইল হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বগুড়া অঞ্চল বগুড়া; অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. রোকনুজ্জামান; উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সুজানগর মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ; উপজেলা কৃষি অফিসার, সুজানগর কৃষিবিদ মো. রাফিউল ইসলাম; কৃষিবিদ মো. খালেদীন আনাম, সহকারী তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, পাবনা; মোসাররাত জাহান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইস্টিটিউট, পাবনা। এছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন দপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি বিজ্ঞানী, প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, প্রদর্শনীভুক্ত কৃষক/কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন প্লট, দেশীয় পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার, এয়ার ফ্লো চেম্বার, বিএডিসি টেবুনিয়ার বিভিন্ন কার্যক্রম, সেভেন স্টার রাইস ব্রান অয়েল মিল পরিদর্শন এবং ঈশ্বরদী উপজেলার ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন কারী চাষীদের সাথে মতবিনিময় করেন।