খোরশেদ আলম জুয়েল: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে, যা চলতি ২০২৫ সনেও স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। গত এক বছরে খুচরা বাজারে ডিমের দাম প্রায় ৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং চলতি মাসেও এই ঊর্ধ্বগতি ধারা অব্যাহত রয়েছে -পোলট্রি ওয়ার্ল্ড এর এক প্রতিবেদনে এমনই এক তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্টটিতে বলা হয়, গত ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি ডজন বড় ও অতিরিক্ত বড় সাদা ডিমের পাইকারি মূল্য ছিল প্রায় ৬ মার্কিন ডলার, আর মাঝারি সাদা ডিমের দাম ছিল প্রায় ৪ মার্কিন ডলার। যা ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে মাঝারি সাদা ডিমের দাম ছিল মাত্র ৩.৪০ মার্কিন ডলার।
ডিমের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ মারাত্মক সংক্রামক বার্ড ফ্লুর নতুন প্রাদুর্ভাব। মার্কিন কৃষি বিভাগ (USDA) পূর্বাভাস দিয়েছে যে ২০২৫ সালে ডিমের দাম আরও ১১.৪% বাড়তে পারে।
বার্ড ফ্লুর কারণে ২০২৪ সালের শেষ তিন মাসে ২০ মিলিয়নেরও বেশি ডিমপাড়া মুরগি মারা গেছে। শুধু ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসেই ১৮.২ মিলিয়ন মুরগি আক্রান্ত হয়েছে, যা পুরো বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২৫ সালের শুরুতেই আরও ৬ মিলিয়ন মুরগি সংক্রমিত হয়েছে।
এছাড়াও দেশটিতে মূল্যস্ফীতির প্রভাবও ডিমের দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। জ্বালানি ও শ্রম খরচ বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় সেখানে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মার্কিন শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BLS) তথ্যমতে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ খরচ ৩.৯% বেড়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কম হলেও এখনও উচ্চহারে রয়েছে।
এছাড়া, ক্যালিফোর্নিয়ার প্রপোজিশন ১২ আইন অনুযায়ী মুরগির খামারের আবাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন হওয়ায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংকট দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার শঙ্কা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু এলাকায় ডিমের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা শিগগিরই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আমেরিকান এগ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও সিইও এমিলি মেটজ জানিয়েছেন, “সংকটের সমাধান রাতারাতি সম্ভব নয়, এটি কমপক্ষে ৬-৯ মাস সময় লাগবে।”
২০২৪ সালে হারিকেনের কারণে বন্য পাখির গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ায় দেশটিতে বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, ২০২৫ সালে যদি বার্ড ফ্লুর প্রকোপ কমে এবং বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে, তবে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে আশা করা হয়েছে।