শুক্রবার , ফেব্রুয়ারি ২১ ২০২৫

অপুষ্টি শব্দটি অভিধান থেকে মুছে ফেলতে হবে – মসিউর রহমান

বিশেষ সংবাদদাতা: ওয়াপসা-বিবি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে আমরা একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চাই। তাই অভিধান থেকে ‘অপুষ্টি’ শব্দটি মুছে ফেলতে হবে। আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাগুলোই আগামীর বাংলাদেশ, আগামীর পৃথিবী গড়তে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ভোক্তাদের ধারণা পোল্ট্রিতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। অথচ, বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশে এখন প্রচুর পরিমাণে প্রিবায়োটিক, প্রোবায়োটিক, ফাইটোজেনিক, অ্যাসেনসিয়াল ওয়েল ইত্যাদি ব্যবহৃত হচ্ছে।

আজ রাজধানীর একটি হোটেলে শুরু হয়েছে ১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজন করছে- ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন- বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। পোলট্রি শিল্পে বিদ্যমান ও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে মোকাবেলা করা যাবে সেমিনারে সে বিষয়ে ৮৮টি দেশী-বিদেশী টেকনিক্যাল পেপার উপস্থাপন করা হবে।

ওয়াপসা-বিবি’র সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন- পোল্ট্রি বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষকগণ পোল্ট্রি বিজ্ঞানকে প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন সমাধান উপহার দিচ্ছেন। বিগত ২৮ বছর ধরে ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখা- ব্যবসা ও বিজ্ঞানের মাঝে সম্পর্কের সেতু বন্ধন তৈরি করেছে। বিজ্ঞানী-গবেষকদের কাজ কখনও শেষ হয়ে যায় না কারণ প্রতিটা দিনই এক একটা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়। জরাজীর্ণতাকে কাটিয়ে নতুন এক সম্ভাবনাময় দেশ গড়ার ডাক এসেছে আমাদের সবার জন্য। নতুন ও অজেয় কে জয় করার চেষ্টা আমাদের নিত্যদিনের কাজেরই অংশ। সঙ্গত কারণেই আমাদের এবারের সেমিনারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- Sustainable Poultry for Emerging Bangladesh. বিপ্লব আরও বলেন- আমাদেকে সাধারণ খামারিদের কথা ভাবতে হবে কারণ তাঁদের সংখ্যাই বেশি। খামার থেকে শুরু করে খাবারের প্লেট পর্যন্ত পুরো চেইনকেই সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে।

সেমিনারের গবেষক ও বক্তারা বলেন- খামারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা না থাকলে কাউকেই পোল্ট্রি খামারের নিবন্ধন দেয়া ঠিক হবেনা। খামারিদের বাঝাতে হবে একের অসতর্কতা অন্যের ক্ষতির কারণ। এভাবেই পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এন্টিবায়োটিক ও ওষুধের ব্যবহার বাড়ার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে।

তাঁরা বলেন- যেভাবে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বাড়ছে, জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে- তাতে নতুন নতুন রোগ-বালাই দেখা দিচ্ছে। আগামীতে পোল্ট্রি বিজ্ঞানীদের কাজ আরও অনেক বাড়বে। লবণাক্ততা সহিষ্ণু, খরা সহিষ্ণু ধানের মত Strong Immunity সম্পন্ন মুরগির জাত উদ্ভাবন করতে হবে।

বক্তারা বলেন- পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েই উৎপাদন বাড়াতে হবে, কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁরা আরও বলেন- ইন্ডাষ্ট্রি বড় হচ্ছে তাই রিসাইক্লিং-এর কথাও গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে। উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে সরকার এ ধরনের শিল্প স্থাপনে প্রণোদনা ও স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে পারেন।

প্রথম দিনের অনুষ্ঠিত সেশনগুলোতে চেয়ারম্যান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইউজিসি প্রফেসর ড. এস.ডি চৌধুরি, বাকৃবি’র সাবেক উপাচার্য্য প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, বিএলআরআই এর সাবেক চীফ সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মো. গিয়াসউদ্দিন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মেম্বার ডিরেক্টর ড. মো. রফিকুল ইসলাম, বাকৃবি’র প্রফেসর ড. কে.এম. সাইফুল ইসলাম এবং প্রফেসর ড. মো. শওকত আলী। কো-চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এ.টি.এম মাহবুব-ই-এলাহী, প্রফেসর ড. মো. বজলুর রহমান মোল্লা, বাকৃবি’র প্রফেসর ড. সুকুমার সাহা, প্রফেসর ড. মো. গোলজার হোসেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা. বয়জার রহমান, পরিচালক উৎপাদন ড. এ.বি.এম খালেদুজ্জামান এবং প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. মো. সাজেদুল করিম সরকার সহ আরও অনেকে।

This post has already been read 134 times!

Check Also

ল্যাবরেটরির মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্যের কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে- খাদ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের মিনি ল্যাব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির …