মো. গোলাম আরিফ (পাবনা) : পাবনার সুজানগর উপজেলার মথুরাপুর মাঠ প্রাঙ্গণে আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয়েছে “পেঁয়াজের পার্পল ব্লচ রোগ নিয়ন্ত্রণে আইডিএম প্যাকেজের উপযোগিতা” শীর্ষক মাঠ দিবস ২০২৫। উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই), গাজীপুর এই আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএআরআই-এর মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড. মো. হারুনর রশিদ। তিনি বলেন, “পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ মসলা জাতীয় ফসল, তবে পার্পল ব্লচ রোগ এ ফসলের জন্য মারাত্মক হুমকি। উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের গবেষকরা এই রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী আইডিএম প্যাকেজ উদ্ভাবন করেছেন, যা চাষিদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।”
তিনি আরও জানান, আইডিএম (সমন্বিত রোগ দমন ব্যবস্থাপনা) পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট মাত্রায় সার প্রয়োগ, সঠিক দূরত্বে চারা রোপণ এবং রোগ দেখা মাত্র নির্ধারিত বালাইনাশক ব্যবহার করে পার্পল ব্লচ রোগ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
আইডিএম প্যাকেজ অনুসারে প্রতি ৩৩ শতাংশ জমিতে ১০ মন গোবর সার, ৪০ কেজি ইউরিয়া, ৩৫ কেজি টিএসপি, ৩০ কেজি পটাশ, ১ কেজি দস্তা, ১ কেজি বোরন ও ২০ কেজি জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারি এবং কন্দ থেকে কন্দ ১০ সেন্টিমিটার দূরত্বে লাগাতে হবে। রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানির সাথে ০১ মিলি লুনা সেনসেশন মিশিয়ে ১০-১২ দিন পরপর তিনবার স্প্রে করার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএআরআই, পাবনার সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শামীম হোসেন মোল্লা। তিনি বলেন, “কৃষি বিজ্ঞানীরা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছেন। কৃষকদের উচিত এসব প্রযুক্তি সাদরে গ্রহণ করা।”
স্বাগত বক্তব্য দেন বিএআরআই, গাজীপুরের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মনিরুজ্জামান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএআরআই-এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শামীম আখতার, ড. রুম্মানা ইসলাম, রুমানা মমতাজ এবং কৃষি তথ্য সার্ভিস, পাবনার সহকারী তথ্য অফিসার কৃষিবিদ মো. খালেদীন আনাম।
মাঠ দিবসে প্রদর্শনী কৃষক মো. রবিউল ইসলাম আইডিএম প্যাকেজ ব্যবহার করে পেঁয়াজ চাষে সাফল্যের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ ১২০ জন কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।