এগ্রিনিউজ২৪.কম রিপোর্ট : বাজারে নকল বা কৃত্রিম ডিমের উপস্থিতি সম্পর্কে জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূরীকরণে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ’। প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক, ভাইবার ইত্যাদি) বাংলাদেশে নকল ডিমের উপস্থিতি সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত/ প্রচারিত হচ্ছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তদন্তক্রমে নিশ্চিত হয়েছে যে, প্রতিবেদনসমূহে বর্ণিত তথ্য-উপাত্ত ও মতামতসমূহ বৈজ্ঞানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা যথাযথ তথ্য প্রমাণ সমর্থিত নয়। এছাড়াও তদন্তক্রমে জানা যায় যে, বাংলাদেশের কোথাও কোন নকল/কৃত্রিম ডিমের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অথচ প্রকাশিত/প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমূহে ভাইরাল করা হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে এ বিষয়ে জনমনে বিরূপ প্রভাব বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে এবং অনেকেই ডিম খেতে অনীহা বা ডিম খাওয়া পরিহার করছেন যা মোটেই কাম্য নয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, ডিম একটি উৎকৃষ্ট মানের খাবর যা সহজলভ্য এবং পুষ্টিমানে ভরপুর। ডিম হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়, প্রসবজনিত সমস্যার ঝুঁকি কমায়, ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায়, চোখ ও লিভার ভালো রাখে, ওজন কমায়, হজম ক্ষমতা বাড়ায়, শরীর সুস্থ রাখে এবং শরীরের হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে। এতসব গুণাগুণ থাকা সত্ত্বেও অপপ্রচারের ফলে দেশের সকল মানুষের পুষ্টির সহজলভ্য অন্যতম প্রধান উৎস ডিম সম্পর্কে জনমনে ভ্রান্ত ধারনা তৈরি হচ্ছে এবং জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। উল্লেখ থাকে যে, প্রাকৃতিকভাবেই কিছু কিছু ডিম ক্রটিযুক্ত বাহ্যিক গঠনের হতে পারে, যেমন- নরম খোসাযুক্ত বা খোসাবিহীন ডিম, কুসুমের বিভিন্ন রঙ, জোড়া কুসুম কিংবা ডিমের ভেতরে কিঞ্চিত রক্ত ও মাংসের টুকরার উপস্থিতি।
ডিমের গুণাগুণ ও পুষ্টিমানের বিচার্যে ডিম খাওয়া উৎসাহিত করতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতি বছর ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালিত হচ্ছে। সুতরাং কৃত্রিম বা নকল ডিম সম্পর্কে বিভ্রান্ত না হয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে প্রত্যহ ডিম খাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। জনসাধারণের অবগতির জন্য আরো জানানো যাচ্ছে যে, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ডিম উৎপাদন ও বিক্রি নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে কাজ করছে বলে জানায়, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে, বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যপ্রমাণ ব্যতিরকে বাজারে নকল বা কৃত্রিম ডিমের উপস্থিতি সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ, প্রতিবেদন ইত্যাদি গণমাধ্যমে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার/প্রকাশ না করার জন্য সর্বসাধারণকে সতর্ক করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর যে কোন নকল বা অনিরাপদ খাদ্যপণ্য উৎপাদন, আমদানি, মজুদ, সরবরাহ, বিপণন ও বিক্রয় বিষয়ে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩-এ কঠোর শাস্তির (৫ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা ২০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দন্ড) বিধান রয়েছে। এছাড়াও উচ্চতর দন্ডযোগ্য অপরাধের জন্য -এর অধীন বিশেষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে মামলা করা যাবে এবং সেক্ষেত্রে শাস্তি মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত হতে পারে।