শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

আসছে ঈদে পরিষ্কার বিবি পালিত ‘রাজা বাবু’

raja babuনিজস্ব সংবাদদাতা : পরিস্কার বিবি। নামটি অনেকের কাছে পরিচিত মনে হচ্ছে তাই না? যারা মোটামুটি সিনেমা দেখেন এবং খোজখবর রাখেন তাদের কাছে রাজাবাবু নামটিও পরিচিত। রাজাবাবু সিনেমাটি করেছেন ভারতীয় পরিচালক আর  বাংলাদেশের রাজাবাবু পালন করছেন বাংলাদেশের পরিস্কার বিবি ও তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে ইতি আক্তার। পার্থক্য কেবল ভারতেরটি সিনেমা আর বাংলাদেশেরটি ষাঁড়।

মানিকঞ্জের দেড় টন ওজনের ষাঁড় গরু লালন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দেলুয়া গ্রামের পরিষ্কার বিবি এবং তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে ইতি আক্তার। প্রতি বছরই তারা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণ করে লাভবান হয়ে আসছে। তবে এবার তাদের গরু বেশ চমক ফেলে দিয়েছে। ফিজিয়ান জাতের ষাঁড়টিকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে বড় করেছেন মা- মেয়ে। আদর করে নাম দিয়েছেন “রাজা বাবু”। রাজা বাবুর ওজন রোববার পর্যন্ত ১,৫৬৬ কেজি।

পরিস্কার বিবি গেল বছর কোরবানি ঈদের সময় ২৭ মণ ওজনের একটি ষাঁড় ১০ লাখ টাকা বিক্রি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। কেড়েছিলেন সবার নজর। সাটুরিয়া উপজেলার দিঘুলিয়া ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামের পরিষ্কার বিবি ও তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে ইতি আক্তার গরু লালনপালন করেই সংসার চালান। অবশ্য ১০-১২ বছর আগে থেকেই পরিষ্কার বিবি এবং তার স্বামী খান্নু মিয়া গরু লালন-পালন করে আসছেন। তবে এবার  কন্যা ইতি আক্তার দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

গত বছর গরু বিক্রি করা টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোদ করেছেন এবং বাকী টাকা দিয়ে বছরখানেক আগে ঢাকার কেরানিগঞ্জ থেকে দুই বছর বয়সী ফিজিয়ান একটি ষাঁড় গরু কিনে আনেন। সাদা ও কাল রংয়ের ষাঁড়টির নাম দেন রাজা বাবু।  নাম ধরে ডাক দিলেই তাদের ডাকে সারা দেয় রাজাবাবু।

রাজা বাবুর খানাদানায়ও বেশ সৌখিন। প্রতিদিন সে মিষ্টি লাউ, দেশি লাউ, শবরি ও বিচি কলা, ছোলা, বোট, কুড়া, ভূষি, খর ও কাঁচা ঘাষ দিয়ে খাবার শুরু করে। বাদ যায়না মাঝে মধ্যে আঙুর, মালটা ও তেুঁতল খাওয়া।

ইতি আক্তার বলেন, রাজা বাবুকে গোসল করানোর জন্য দিনে ২ বার ১৪টি স্যাম্পু ও ৬ কন্ডিশনার ব্যবহার করা হয়। ষাঁড়টি লম্বায় ৭ ফিট ৩ ইঞ্চি, বুকের বের ৯ ফিট ১ ইঞ্চি। বর্তমান ওজন প্রায় ৩৯ মণ হলেও ঈদের আগে আরো বাড়বে বলে জানায় পরিস্কার বেগম।

ইতি আরো জানান, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এ রাজাবাবুকে লালন করেছি। রাজা বাবু মাঝে মাঝে রেগে যায়, তখন ঠাণ্ডা পানি ছিটিয়ে দিয়ে শবরি কলা সমানে ধরলেই সব ঠিক হয়ে যায়। তবে এ ষাঁড়টি এমনিতে খুব ঠাণ্ডা প্রকৃতির।

পরিষ্কার বিবি বলেন, আমাদের রাজা বাবু ষাঁড়টিকে সম্পূর্ণ দেশী খাবার খাওয়ানো হয়। ওর পিছনে ৩ জন মানুষ সারা বছর সময় দিয়েছি। ২টি সিলিং ফ্যান লাগানো হয় ওর মাথার ওপরে। বিদ্যুৎ চলে গেলেই বড় পাখা দিয়ে সারাক্ষণ বাতাস করি। ওর ব্যায়াম করার জন্য দিনে ২০-২৫ বার বিভিন্ন স্থানে বেধে রাখি।

এ ব্যাপারে পরিষ্কার বিবির স্বামী খান্নু মিয়া জানান, আমি গ্রামের মহাজনদের কাছ থেকে সুদ করে টাকা এনে এ ষাঁড়টিকে বড় করেছি। প্রতিদিন ১০০০-১২০০ টাকার ২৫ কেজি পরিমাণ খাবার খাচ্ছে ৭-৮ মাস ধরে। সরকারিভাবে সহজ শর্তে ঋণ পেলে আরো বড় পরিসরে গরু মোটাতাজা করা যেত।

This post has already been read 5648 times!

Check Also

মহিষের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার

সাভার সংবাদদাতা: মহিষের উৎপাদন বাড়ানো আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, একসময় …