কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (International Rice Research Institute) সফর করেন। তাঁর সফরসঙ্গী হিসাবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (Bangladesh Agriculture Research Council) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (Bangladesh Rice Research Institute) এর মহাপরিচালক এবং কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (Krishi Gobeshona Foundation) এর নির্বাহী পরিচালক অংশগ্রহণ করেন।
ইরি (IRRI) এর মহাপরিচালক ড. ম্যাথিউ মোরেলসহ উর্ধ্বতন বিজ্ঞানীগণ কৃষিমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। সফরে মন্ত্রীকে ধান গবেষণার বিভিন্ন দিক বিশেষ করে বাংলাদেশের উপযোগী জলমগ্নতা, খরা, লবণাক্ততা, তাপমাত্রা সহিষ্ণু; ভিটামিন, জিঙ্ক ও আয়রনসমৃদ্ধ অধিক উৎপাদনশীল ধান উন্নয়ন এসব বিষয়ে অবহিত করা হয়। এ ছাড়াও ইরি’র শীর্ষ বিজ্ঞানীগণ গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করেন। কৃষি মন্ত্রী ইরি’র বিভিন্ন গবেষণাগার পরিদর্শন করেন।
ইরি’র মৌলিক গবেষণার উল্লেখযোগ্য এবং প্রধান দিক হচ্ছে ধানের উৎপাদনশীলতা বহুগুণ বাড়ানোর লক্ষে এ ফসলের শরীরতাত্ত্বিক পরিবর্তন বিষয়ে যুগান্তকারী কর্মকাণ্ড। এই সুদূর প্রসারী গবেষণায় ধানের জিনের গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এর সালোকসংশ্লেসন (Photosynthesis) প্রক্রিয়ার দক্ষতা বাড়ানো হবে। ধান একটি C3 ভুক্ত উদ্ভিদ শ্রেণী, অন্যদিকে ভুট্টা ও সরগম সি৪ভুক্ত উদ্ভিদ। C4 ফসল অধিক পরিমাণে সূর্যের আলো ও বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে অধিক খাদ্য প্রস্তুত করতে পারে। তাই C4ভুক্ত উদ্ভিদ এর সালোকসংশ্লেসনের দক্ষতা বেশি হবার কারণে সরগমের জীন ব্যবহার করে ধানের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে এ গবেষণা করা হচ্ছে।
বিগত বাইশ (২২) বছরব্যাপী এ গবেষণার ৭ বছরের অগ্রগতি বিষয়ে ল্যাবরেটরিতে বিশদভাবে মন্ত্রীকে অবহিত করেন ইরি’র বিজ্ঞানী ড. রবার্ট কু। মতিয়া চৌধুরী এ গবেষণার বিষয়ে অত্যন্ত আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি ড. কু এর সাবলীল বর্ণনা শুনে সন্তোষ প্রকাশ এবং সাফল্য কামনা করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের মৌলিক গবেষণা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি আশীর্বাদ বয়ে আনবে।
তিনি ইরি’র এসব মৌলিক ও উন্নত গবেষণায় বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের অধিক হারে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির অনুরোধ করেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের কৃষির সাফল্য সরকারের নানামুখী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে ধান উন্নয়নে ইরি এর মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তাই ইরির গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনার কৃষিবান্ধব সরকার বাংলাদেশ সরকার সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করছে এবং এ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।