শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

‘খাদ্য অধিকার আইন’ চান কৃষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : খাদ্য অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে কৃষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) ও উন্নয়নধারা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এই দাবি করেন। এ সময় বক্তরা বলেন, দেশে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে দেশের সকল মানুষের খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশে বক্তরা বলেন, মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার পূর্বশর্তই হচ্ছে তাঁর খাদ্যের অধিকার পূরণ করা। এজন্য দেশে আইনী কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সকল মানুষের খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতি, বাস্তবায়ন কৌশল এবং সমন্বিত কৃষি, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির দিক নির্দেশনা থাকবে। সরকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি পরিচালনা করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় তা বিলি-বন্টন হয়ে যায়, ফলে এসব কর্মসূচির সুবিধা প্রকৃত দরিদ্র জনগোষ্ঠি পাচ্ছে না। তাই, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সকল মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন খানির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ। বক্তব্য রাখেন, খানির সভাপতি ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ইরি) ও সাবেক কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টটেটিভ ড. মোহাম্মদ জয়নুল আবেদনীন, খানির সহ সভাপতি ও কৃষিবিষয়ক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব রেজাউল করিম সিদ্দিক, বিসেফ ফাউন্ডেশানের সাধারণ সম্পাদক আতিউর রহমান মিটন, খানির সহসভাপতি মিহির বিশ^াস, অ্যাকশনএইডের সহযোগী পরিচালক অমিত দে ও উন্নয়নধারার নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম।

এ সময় বক্তারা, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খাদ্য অধিকার বিষয়ক আইন থাকলেও বাংলাদেশে এখনো তেমন কোন আইন নেই। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দলিলে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অঙ্গিকারাবদ্ধ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশীয় খাদ্য অধিকার সম্মেলনে খাদ্য নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাই, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দেশে খাদ্য নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন, খাদ্যের অধিকারকে নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন, জনগণের কাজের অধিকার ও ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, কৃষিতে কর্মরত নারীদের কৃষক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া এবং কৃষি উপকরণ ও জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, মৌজা মানচিত্র ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও শ্রমজীবী নারী কৃষকের জন্য খাসজমির ন্যায্য বন্টন ও ভূমি সংস্কার নিশ্চিত করার দাবিসহ মোট এগার দফা তুলে ধরেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস খানি সারাদেশে ১০-১৬ ডিসেম্বর সারাদেশে খাদ্য অধিকার সপ্তাহ আয়োজন করে। এই উপলক্ষ্যে সারাদেশের ১৫টি জেলায় খাদ্য অধিকার দিবসের দাবিতে সমাবেশ, কৃষক-কৃষাণি জমায়েত, গণশুনানি, সাইকেল র‌্যালি, বীজমেলা, গণমিছিল-সহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করে। এসব প্রচারণায় জাতীয় সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, কৃষক-কৃষাণিসহ অধিকারকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

This post has already been read 3570 times!

Check Also

ভেটেরিনারি ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব) এর বিক্ষোভ সমাবেশ

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামলীগের বিদায়ের তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে …