মো. আরিফুল ইসলাম (বাকৃবি):
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যাক্তিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৪ জুলাই মো. ইউছুব আলী মন্ডলকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির তদন্তের সময় সম্প্রতি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাবেক এডিশনাল রেজিস্ট্রার মো. ইউছুব আলী মন্ডলের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে।
লিখিত এক অভিযোগ পত্রে কৃষি পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক ডিন পরেশচন্দ্র মোদক, পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম ও কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যাক্তিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ করেন। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করেন তারা।
তদন্ত কমিটিতে থাকা ওই তিন শিক্ষক স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন, সাবেক রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল খালেকের দুর্নীতি তদন্তে গঠিত কমিটিতে আমরা তিন শিক্ষক দায়িত্বে ছিলাম। যা সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করে তদন্ত প্রতিবেদন ভিসি বরাবর জমা দিয়েছি। ঐ প্রতিবেদনে রেজিস্ট্রার দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে পাঠানো হয়েছে। ঐ প্রতিবেদনে তৎকালীন এডিশনাল রেজিস্ট্রার ইউছুব আলী মন্ডলের নাম বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে এবং রেজিস্ট্রারের বিভিন্ন দুর্নীতিতে ডান হাত হিসেবে কাজ করেছে। ২০১৫ সালের বহুল বিতর্কিত তিন শতাধিক তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী নিয়োগে যে বাণিজ্য হয়েছিল, তিনি ঐ নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন।
জানা যায়, আলোচিত ঐ নিয়োগের পর তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু তার ব্যক্তিগত নথিতে এবিষয়ে কোনো রেকর্ড ছিল না। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি তাকে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো জবাব দিতে পারেননি। পরে তৎকালীন প্রশাসন ইউছুব আলী মন্ডলকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দিতে চেয়েও সফল হতে পারেনি। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি এসব বিষয় অবহিত করে বর্তমান প্রশাসন আশ্বস্ত করেছিল যে, ইউছুল আলী মন্ডল কখনও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হতে পারবে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও এমন প্রমাণিত দুর্নীতিগ্রস্থ লোকের হাতে পরীক্ষা শাখার মতো গোপনীয় ও স্পর্শকাতর শাখার নিয়ন্ত্রণ কতটা নিরাপদ তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা।
ঐ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক পরেশচন্দ্র মোদক বলেন, বর্তমান ভিসিকে ইউছুব আলী মন্ডলের দুর্নীতির কথা বলার পরও তিনি এ নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা শুনেছি ভিসি স্বজনপ্রীতির কারণে এ নিয়োগ দিয়েছেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থেকে তিনি এখন সার্টিফিকেট বিক্রি, রেজাল্টে গ্রেড বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দুর্নীতি করতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে ইউছুব আলী মন্ডলের বক্তব্য জানতে ফোন দেয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভি করেননি।