কাজী কামাল হোসেন (নওগাঁ):
নওগাঁর নিম্নাঞ্চলে ইরি-বোরো ধান রোপণে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে কৃষকরা। বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় ও বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বুক ভরা আশা নিয়ে এই এলাকার কৃষকরা পুরোদমে শুরু করে দিয়েছে ইরি-বোরো ধান রোপণের কাজ।
জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে রোপা-আমন মৌসুমে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমির আবাদী ধান সম্পন্ন নষ্ট হয়ে যায়। বন্যার পানি নেমে যাবার সাথে সাথে কৃষকরা তরিঘড়ি করে মাঠে নামেন বীজতলা তৈরি করার জন্য। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে রাণীনগর উপজেলায় ১৮ হাজার ৪ শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যে ৮ টি ইউনিয়নে ৯৯০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের জোড়ালো নজদারী আর কৃষকদের সচেতনতার কারণে রোগ বালাই মুক্ত রয়েছে বীজতলা। ইতিমধ্যে উপজেলার নিন্মাঞ্চলে কৃষকরা পুরোদমে ধান রোপণের কাজ শুরু করেছে। উপজেলার মিরাট, হরিশপুর, ধনপাড়া, মেরিয়া, কুনৌজ, বড়খোল, আতাইকুলা, সিম্বা, খাগড়া, লোহাচূড়া, ছয়বাড়িয়া সহ প্রায় সবগুলো ইউনিয়নের মাঠে খুব তোর-জোর করেই ইরি-বোরো ধান রোপন শুরু করেছে কৃষকরা।
উপজেলার খাগড়া গ্রামের কৃষক মজনুর রহমান জানান, গত আমন মৌসুমে প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে আতব ধান রোপন করেছিলাম। ভয়াবহ বন্যার কারণে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। তাই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম ইরি-বোরো ধান রোপন শুরু করেছি। চলতি মৌসুমে প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে ইরি ধান রোপণ করবো। ইতিমধ্যে প্রায় ৪২ বিঘা জমিতে ধান রোপণ শেষ হয়েছে। হরিশপুরের কৃষক আব্দুল আহাদ, ছামছুল আলম, আবুল হোসেন, হামিদ ফারাজি, আতাইকুলার গোলাপ হোসেন সহ বিভিন্ন এলাকার কৃষক জানান, এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় এবং কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে সঠিক পরিচর্চা করার কারণে বীজতলার কোন সমস্যা হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যে মাঠগুলোতে ধান রোপণ শেষ হবে বলে জানান তারা।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম গোলাম সারওয়ার জানান, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ১৮ হাজার ৪ শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বীজতলায় রোগ-বালায় দমনের জন্য আলোকফাঁদ সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কৃষকরা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুসরণ করায় ধানের চারাগুলো রোগমুক্ত রয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আবাদের লক্ষ্য মাত্রা পূর্ণ হবে বলে তিনি জানান।