ফকির শহিদুল ইসলাম(খুলনা): খুলনায় এসএমই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত খুলনা সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে স্থানীয় পণ্যের প্রভাব-সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিন উল আহসানের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন এর সহযোগী অধ্যাপক এস. এম. আরিফুজ্জামান।
প্রবন্ধকার জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি জাতীয় অর্থনীতিতে এসএমই পণ্যের অবদান হচ্ছে শতকরা ২৭ ভাগ এবং এ সেক্টরের কাজ করছে ৩৫ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে এডিবি’র ২০১৫-এর রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে জাতীয় অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান ৪২ শতাংশ। তিনি এসএমই-কে বাংলাদেশের চালিকা শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এ সেক্টরের বিরাজমান সমস্যাবলী দূর করা গেলে দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। তিনি তাঁর প্রবন্ধে এসএমই শিল্প বিকাশে অর্থ বা ঋণের সহজলভ্যতা না থাকা, ঋণের সুদের হার বেশী, দক্ষ জনশক্তির অভাব, প্রযুক্তি সহজলভ্য না হওয়া, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা, বিপণনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা, প্রশিক্ষণের সীমাবদ্ধতা, সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতা, পণ্যের মান নির্ধারণের ব্যবস্থা না থাকা এবং তথ্য উপাত্তের সংকট ইত্যাদি সমস্যাকে চিহ্নিত করেন।
তিনি জানান- গত বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের চাহিদার বিপরীতে ঋণের ব্যবস্থা করা গেছে মাত্র ৪১ শতাংশ। অর্থের অভাবে অনেক উদ্যোক্তাই তাঁর উৎপাদিত পণ্যের মান ভালো হওয়া সত্বেও ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা চালাতে পারেন না, ব্রান্ডিং করতে পারছেন না। ফলে তার পণ্য মার খাচ্ছে, তিনি সাহস হারাচ্ছেন। তিনি এসব সমস্যা সমাধানে সরকারি উদ্যোগ কামনা করেন।
জেলা প্রশাসক সভাপতির বক্তৃতায় বলেন, এসএমই শিল্পে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ আশাব্যঞ্জক। তাঁরা পণ্য উৎপাদন করে নিজেদের এবং দেশের ভাগ্যোন্নয়ন করছেন। মেলাতে শুধু পণ্য বিক্রিই আসল উদ্দেশ্য নয়, মেলা থেকে ব্যাপক ধারণা নেয়া এবং পণ্যের প্রচারও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি বলেন, বর্তমানে ই-কমার্স শক্তিশালী। তাই এর মাধ্যমেও পণ্যের প্রচারসহ ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পদ্মা সেতু শুধু গাড়ী পাড়াপাড়ের জন্যই নয়, এ সেতু এ অঞ্চলের জন্য উন্নয়ন নিয়ে আসবে।
সেমিনারে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা শাখার ডিজিএম মোঃ আমজাদ হোসেন, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক আহমেদ এবং জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি (নাসিব)’র সভাপতি মো. ইফতেখার আলী বাবু। অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তৃতা করেন বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ নেওয়াজ।
সেমিনারে ঢাকাসহ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের প্রায় ৮০ জন শিল্প উদ্যোক্তা/প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা তাদের সফলতার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যাবলী উপস্থাপন পূর্বক সমাধান করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।