মো. আরিফুল ইসলাম(বাকৃবি): মাটিবিহীন কোন প্রকার সার বা কীটনাশক ছাড়া মাছ চাষের পানি দিয়ে সবজি চাষের পদ্ধতিই হলো অ্যাকুয়াপনিক্স। বাড়ির ছাদ ও আঙ্গিনায় এ পদ্ধতির মাধ্যমে শতভাগ নিরাপদ জৈব খাদ্য উৎপাদন করে নিজের পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশ ও জাতিকে নিরাপদ খাদ্য উপহার দেওয়া সম্ভব। মাটির প্রয়োজন হয় না এবং একই পানি পরিশোধন করে বার বার ব্যবহার করা যায়। এতে করে কৃষি কাজের জন্য পানির উপর চাপ কমবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দুই দিনব্যাপী অ্যাকুয়াপনিক্সের উপর প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স রুমে দুই দিনব্যাপী অ্যাকুয়াপনিক্সের উপর প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মাহ্ফুজুল হক সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গিয়াস উদ্দিন আহমদ। এর আগে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. জি. ভারনন বায়ার্ড। এসময় অনুষদীয় অ্যাকুয়াপনিক্স ল্যাবের উদ্বোধন করা হয়।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় দেশের এবং বিদেশের প্রায় ৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করবেন। প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন অ্যাকুয়াপনিক্সের উদ্ভাবক বাকৃবি মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ সালাম ও আমেরিকার লিডিং সাইন্স ইউনিভার্সিটি ও ন্যাশনাল হাওয়াইয়ের অধ্যাপক ড. জি. ভারনন বায়ার্ড।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে বাজারে যেসব তাজা শাকসবজি দেখা যায়, তার প্রায় শতভাগই উৎপাদন করা হয় উচ্চমাত্রায় কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগের মাধ্যমে। ফলে একদিকে যেমন এটার উৎপাদন ব্যয় বেশি অন্যদিকে তা স্বাস্থের জন্যেও মারাত্মক ক্ষতিকর। একই সাথে এসব রাসায়নিক পরিবেশ দূষণ এবং মাটির গুণাগুণ ধ্বংস করছে। অথচ বাড়ির ছাদে অথবা আঙ্গিনায় ট্যাঙ্কে মাছ চাষ করে এবং ট্যাঙ্কে ব্যবহৃত সেই পানি ব্যবহার করে কোন প্রকার রাসায়নিক সার ব্যবহার না শাকসবজি উৎপাদন করা সম্ভব। আগামীর কৃষি হবে পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিহীন। পরিবেশ সুন্দর রাখার সাথে সাথে সুস্থ সবল জাতি গঠনেও ভূমিকা রাখবে অ্যাকুয়াপনিক্স পদ্ধতিতে চাষাবাদ।