কুষ্টিয়া সংবাদদাতা : জেলার ছয়টি উপজেলার বোরো ধান ক্ষেত ক্ষতিকর মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকার হাত থেকে রক্ষার জন্য ধানের জমিতে গাছের ডাল পুতে পাখি বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া (পার্চিং) উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই পদ্ধতিটি অর্থ সাশ্রয়ী, কৃষকের আয়াশলব্ধ এবং পরিবেশবাদ্ধব হওয়ায় কৃষকেরা সহজেই অধিক উৎপাদনের জন্য পদ্ধতিটি বেছে নেন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বোরো আবাদকে পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে নির্বিঘœ করতে জোরেসোরে কৃষকের মধ্যে এই পদ্ধতিটি ছড়িয়ে দিচ্ছে।
এ উপলক্ষে ঘটাকরে গতকাল (২৭ ফেব্রুয়ারি) জেলার সকল উপজেলাতেই কুষ্টিয়া কৃষি স¤ ú্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে কৃষদের নিয়ে পার্চিং উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। জেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে কৃষকদের উদ্দেশ্যে কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, পাখি হচ্ছে আমাদের প্রকৃতির অলঙ্কার, দিন দিন খাদ্য এবং আবাসস্থলের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে পোকাখাদক পাখি, পাখি প্রকৃতি এবং ফসলের অকৃত্রিম বন্ধু, পাখিরা ফসলের কীট-পতঙ্গ খেয়ে অনেক উপকার করে, ফসলের মাঠে ক্ষতিকারক পোকার সংখ্যা বেশি থাকে বিধায় পাখি এদের বেশি খেয়ে থাকে। ফসলে ক্ষতিকারক পোকা নিয়ন্ত্রণে পাখির ভূমিকা অপরিসীম।
তিনি বলেন, ফসলের জমি থেকে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে পাখি বসার জন্য শুকনো গাছের ডাল/বাঁশের কঞ্চি পুঁতে দেয়াই হলো পার্চিং। পার্চিং করলে আপনার ফসলের পোকা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হবে না ঠিকই তবে পার্চিং হচ্ছে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার একটি উত্তম পরিবেশ বান্ধব কৌশল। পার্চিং করে দিলে পাখি সহজেই ফসলের ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে ধ্বংস করবে এবং পার্চিং এর ফলে জমিতে পাখির বিষ্টা যোগ হয়ে জমির উরর্বরতা বৃদ্ধি পাবে। এ সময় তিনি কৃষকদের প্রতি ধানের জমিতে পার্চিং ব্যবহার করার আহবান জানান।
পার্চিং উৎসবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুশান্ত কুমার প্রামাণিক, অতি:উপপরিচালক (পিপি) কৃষিবিদ বিভাস চন্দ্র সাহা, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সেলিম হোসেন সহ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের এই পার্চিং পদ্ধতিটি কৃষকদের মধ্যে যথাযথভাবে প্রয়োগ হলে বোরোর আবাদ নি:সন্দেহে আশাতীত হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মহলের ধারনা।