ইফরান আল রাফি: ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায় প্রতিবারের মত এবারও পান চাষীরা পানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছেন। সোমবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় মুক্তাগাছার চৌরঙ্গী মোড়স্থ পানের পাইকারী বাজারে গিয়ে দেখা যায় দরকষাকষি চলছে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে এবং বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চলছে ক্রয়-বিক্রয়। সকাল ১০ ঘটিকা হতে জমতে শুরু করে এই বাজার। খুব ভোরে পান চাষীরা পানের বরজ থেকে পান সংগ্রহ করে প্রথমে বিরা (১বিরা=৮০ টি পান) আকারে সাজায় তারপর অনেক গুলো বিরা একএে করে গাদি (বিরার সমষ্টি) বানায় এবং এ কাজে সহযোগিতা করে চাষীর পরিবারের সদস্যরা। কলা পাতা দিয়ে মুড়িয়ে পরবর্তীতে বাজারে নিয়ে আসা হয় পান। বাজারে গিয়ে দেখা যায় অনেকে বাইসাইকেল অথবা ব্যাটারি চালিত অটো দিয়ে পানের গাদি নিয়ে এসেছে।
সাম্প্রতিক হালকা বৃষ্টি হওয়ায় পানের বরজে প্রচুর নতুন পাতা গজাতে শুরু করেছে। পানগুলোকে আকারের উপর ভিওি করে ছোট, বড় এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এ বিষয়ে একজন পান চাষী বলেন, বড় পানগুলো বিরা প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা, ছোট পানগুলো বিরা প্রতি ৫০-৬০ টাকা এবং গতবারের চেয়ে এবার ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় একজন চাষী, সফল পান চাষী আরিফুল ইসলাম এর কথা বল্লাম। পরবর্তীতে মোবাইলে আরিফুলের সাথে যোগাযোগ করা হয়। আরিফুলের সাথে কথার একপর্যায়ে জানা যায়, সে গত ৪ বছর আগে কৃষি শিক্ষায় ডিপ্লোমা পাস করেন, স্বপ্ন ছিল চাকুরী করবে কিন্তু চাকুরী না পেয়ে অন্যান্য যুবকের মত হতাশাগ্রস্থ না হয়ে কৃষি উদ্যেক্তা হবার স্বপ দেখেন। নিজের পৈএিক সম্পওিতে বিশাল ২টি পানের বরজ করেন। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক উপায়ে তিনি চাষাবাদ করে।
তিনি জানান, জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহারে বেশী ফলন পাওয়া যায় এবং পানের বাজার দর নির্ধারনে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আরিফুল আরো জানান, পান চাষীদের জন্য তেমন কোন প্রশিক্ষণ, লিফলেট বা বই দেওয়া হয়না। পান চাষের সম্ভবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ধান-পাটের চেয়ে পান চাষে কয়েকগুন বেশী লাভ, সরকারী সহযোগিতা পেলে এ চাষ আরো বৃ্দ্ধিপাবে। অনুকূল আবহাওয়া, শিলা বৃষ্টি কম হওয়াকেই আশানুরুপ ফলনের জন্য দায়ী করেছে চাষীরা। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, উপজেলার তারাটি, মহিষদিয়া, সএাশিয়া, মাইনকোন এলাকার চাষীরা পান চাষের দিকে বেশী ঝুঁকছে। এই পানগুলো স্থানীয় পাইকারেরা ক্রয় করে ট্রাক যোগে জয়দেবপুর চৌরাস্থা, কাওরান বাজার সহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যায়।