ফকির শহিদুল ইসলাম(খুলনা): স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে সুন্দরবনের বনদস্যু, জলদস্যু ও ডাকাত বাহিনীর প্রধানসহ ছয় বাহিনীর ৫৭ জন সদস্য অস্ত্র ও গোলা-বারুদসহ আত্মসমর্পণ করেছেন। বুধবার (২৩ মে) দুপুর পৌনে ১টার দিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের র্যাব-৬ খুলনা সদরদপ্তরে বনদস্যুরা এ আত্মসমর্পণ করেন ।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র্যাব-৬ এর পরিচালক খন্দকার রফিকুল ইসলাম। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, কেসিসির নব-নির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক আওরঙ্গজেব চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ছয়জন সদস্য।
জানা গেছে, ছয়টি দস্যুবাহিনীর মধ্যে দাদা ভাই বাহিনীর ১৫ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা ১২টি অস্ত্র ও ১৭৮ রাউন্ড গুলি জমা দেন। হান্নান বাহিনীর নয়জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা আটটি অস্ত্র ও ১৩০ রাউন্ড গুলি জমা দেন। আমির আলী বাহিনীর সাতজন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা পাঁচটি অস্ত্র ও ৪১ রাউন্ড গুলি জমা দেন। সূর্য বাহিনীর ১০ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা ১১টি অস্ত্র ও ৩৭০ রাউন্ড গুলি জমা দেন। ছোট শাসছু বাহিনীর নয়জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা ১০টি অস্ত্র ও ৩১০ রাউন্ড গুলি জমা দেন। মুন্না বাহিনীর সাতজন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা ১২টি অস্ত্র ও ২৫৫ রাউন্ড গুলি জমা দেন। মোট ছয়টি গ্রুপের ৫৭ জন আত্মসমর্পণ করবেন। তারা অস্ত্র জমা দেবেন ৫৮টি এবং গুলি জমা দেবেন ১২৮৪ রাউন্ড।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা অঞ্চলের তিন দস্যুবাহিনী সুন্দরবনের শ্যামনগর, আড়পাঙ্গাসিয়া, মোংলা, আন্ধারমানিক, হারবাড়িয়া, কলাগাছি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জেলে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় করতো। বনের ওপর নির্ভরশীল সাধারণ মানুষ রীতিমতো তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিল। তাদের মাসোয়ারা দিয়ে জেলে-মৌয়ালদের বনে প্রবেশ করতে হতো। এমনকি বনরক্ষীরাও তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতো। তবে সাম্প্রতিক র্যাবের বেশ কয়েকটি সফল অভিযানের পর দস্যুদের দৌরাত্ম্য কমতে থাকে। একই সঙ্গে সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় এসব দস্যু আত্মসমর্পণের পথ খুঁজতে শুরু করে। যার ধারাবাহিকতায় ইতোপূর্বে ২১৭ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে।