নাহিদ বিন রফিক : বন-জঙ্গলে জন্মানো ডুমুরকে অনেকেই অবহেলা করি। তবে এর যথেষ্ট পুষ্টিগুণ রয়েছে। দেখতে প্রায় লাটিমের মতো। গ্রামাঞ্চলে যাকে ‘বুগই’ নামে চিনে। কাঁচা অবস্থায় সবজি আর পাকলে হয় ফল। এ সবজি বা ফল সম্পর্কে আমরা ক’জনইবা জানি। অথচ উন্নত বিশ্বে সবার প্রিয়। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে এর প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে (পাকা) ৮০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আছে। অন্য উপাদানের মধ্যে শর্করা ৭ দশমিক ৬ গ্রাম, আমিষ ১ দশমিক ৩ গ্রাম, ভিটামিন-এ ১৬২ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি ০দশমিক ১১ মিলিগ্রাম, চর্বি ০ দশমিক ২ গ্রাম, ভিটামিন সি ৫ মিলিগ্রাম, লৌহ ১ দশমিক ১ মিলিগ্রাম এবং খনিজ লবণ রয়েছে ০ দশমিক ৬ গ্রাম করে।
ডুমুর কাঁচা এবং পাকা উভয়ই খাওয়া যায়। কচি অবস্থায় এটি সবজি হিসাবে আর পাকলে বলে ফল। পাকা ডুমুর খেতে মিষ্টি এবং রসালো। এর ঝোল, ভর্তা, এসব নিরামিষভোগীর স্বাদের খাবার। এটি প্রক্রিয়াজাত করে শরবত ও জ্যাম তৈরি করা যায়। ফল গুঁড়া করে তৈরি করা যায় কফির বিকল্প খাদ্য। ডুমুর হিন্দু স¤প্রদায়ের পূজার বিশেষ খাদ্য উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়। তারা চৈত্র সংক্রান্তিতে ডুমুর দিয়ে নিরামিষ রান্না করেন।
ডুমুরের ভেষজগুণও আছে। বহুমূত্র এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ডুমুর বেশ কার্যকরি। টিউমার ও আঁচিল নিরাময়েও কাজ করে। এছাড়া এর কষ দুধকে জমাট বাঁধায়। এতো গুণে গুণান্বিত এ সবজি বা ফলগাছের প্রতি আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। এ দেশে উৎপাদিত ডুমুর স্থানীয় জাতের। যদিও এর অনুমোদিত কোনো জাত উদ্ভাবন হয়নি। তবে সার ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যার মাধ্যমে এর ফলন বাড়ানো সম্ভব। অন্য অপ্রচলিত ফলের পাশাপাশি ডুমুর চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণে কৃষি বিভাগের কাজ চলমান আছে।