ডক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম: কোরবাণীর ঈদ আমাদের খুশি আনন্দ দেয়, দরিদ্র জনগোষ্ঠির পুষ্টির যোগান দেয়, মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দেয়। সে সাথে অনাকাক্সিক্ষত কাজে এনে দেয় বিপর্যস্ত পরিবেশ। ঈদের আনন্দে আমরা অনেক সময় ভুলে যাই আমাদের পরিবেশ রক্ষার কথা। পাশাপাশি নিজেদের অজান্তে নষ্ট করে ফেলি মূল্যবান কিছু সম্পদ। অথচ আমাদের একটু সচেতনতা থেকে আমরা রক্ষা করতে পারি আমাদের পরিবেশ আরো কিছু মূল্যবান সম্পদ।
পশুর রক্ত থেকে সার তৈরি করা যায়। পশুর রক্ত থেকে উৎকৃষ্ট জৈবসার পাওয়া যায়। এতে শতকরা প্রায় ১০ ভাগ নাইট্রোজেন থাকে, যা ইউরিয়া সারের মতো কাজ করে। এছাড়াও এতে আছে ফসফরাস ও পটাশিযাম। জমির উর্বতা বাড়ানোর জন্য এ রক্তসার খুবই উপযোগী। তাই পশুর রক্তকে ফেলনা মনে করে অপচয় করা মোটেও উচিত নয়। যেখানে সেখানে পশু জবাই না করে সম্ভব হলে যে জমিতে সহসাই ফসল উৎপাদন করবেন, সে জমিতে পশু জবাই করুন। কেবল রক্তের উপর কিছু মাটি চাপা দিন। কিছু দিনের মধ্যেই তা’ পচে উৎকৃষ্ট সারে পরিণত হবে।
পশুর নাড়ি-ভূড়ি ও মল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলে নোংরা দুগন্ধময় ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। অথচ এগুলোকে এক জায়গায় গর্ত করে পচালে তা’ থেকে মূল্যবান সার পাওয়া যায়। অথবা সে গর্তে ১ দেড় মাস পর যে কোন শাকসবজি লাগিয়ে দিলে বাহারি গাছ হবে বেশি বেশি ফুল ফল ধারণ করে লাভ এনে দিবে। সুতরাং রক্ত বা নাড়িভুড়ি থেকে প্রাপ্ত এ মূল্যবান জৈব সার ব্যবহারে সবাই সম্মিলিতভাবে যতœবান হই। তবে দুগর্ন্ধ দুষিত পরিবেশ থেকে রক্ষা পেতে এসব কাজে সাথে জবাই করা জায়গায় পরিমাণ মতো ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিতে হবে। সিটি করপরেশন বা অন্যান্য কমিউনিটি লোকদের সহায়ক করলে আমাদের পরিবেশ সুসম্মত থাকবে ঈদের আনন্দ নির্মল সাবলির সুন্দর থাকবে।
সব বর্জ্য আমাদের পরিবেশ বিপর্য়য়ের কারণ সেসব বর্জ্য পদার্থই আমাদের ফসলবান্ধব পদার্থ। দরকার শুধু আমাদের জ্ঞানটুকুকে পরিকল্পনা মাফিক কৌশলে কাজে লাগানো যথাযথ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা যায তখন আমাদের পরিবেশ যেমন সম্মত থাকবে সার্বিক লাভও তত বেশি হবে। কোরবানির বর্জ অপসারণ করে নির্ধারিত স্থানে ফেলুন।
লেখক: কৃষিবিদ, লেখক ও কৃষি মিডিয়া বিশেষজ্ঞ।