ডেস্ক রিপোর্ট : দু’ একদিনের মধ্যেই দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশকিছু জেলা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো এ ব্যাপারে ত্বরিত ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে অনেক মানুষ ও গবাদিপশু ও ফসলের। মাদারীপুর নামে একটি ফেইসবুক পেইজে এমনই একটি তথ্য ছবিসহ উপস্থাপন করা হয়েছে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে লেখাটি হুবহু নিচে দেয়া হলো-
ব্রহ্মপুত্রে জল বাড়ছে গত ৪/৫ দিন থেকে। অন্যান্য বছরের হিসাব মতে চীন পেরিয়ে, অরুণাচল আর আসামের উপর দিয়ে আসত সপ্তাহখানিক লেগে যাবে। মানে সেপ্টেম্বরের ৭-১০ তারিখের দিকে কুড়িগ্রামে বন্যা শুরু হতে যাচ্ছে। তারপর জামালপুর, সিরাজগঞ্জ হয়ে নিম্নাঞ্চলে বন্যা শুরু হবে। গত পঞ্চাশ বছরে এত জল চীনারা ব্রহ্মপুত্রে দেখেনি!
আজ (৩ সেপ্টেম্বর) থেকেই খবরটা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে গুরুত্ব পাওয়া উচিত ছিল। জরুরী ভিত্তিতে আমাদের পরিবেশ ও দুর্যোগ মন্ত্রনালয় চীনে এবং ভারতের কাছে জলের উচ্চতা, গতিবেগ, প্রবাহের মাত্রার প্রতিঘণ্টার তথ্য নিয়ে এই মঙ্গলবারের ভিতর একটা একশ্যান প্লান করার কথা ছিল। এই পরিমান জলে, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল বা তার নিচে কোন্ কোন এলাকাকে ডুবিয়ে দেবে তা বের করে, সেই অঞ্চলের বাড়িগুলো যদি শুক্রবারের আগে খালি করে দেয়া যায়, তাহলে ক্ষয়ক্ষতি কমবে। এই কাজগুলো খুবই সম্ভব। দুর্যোগ মন্ত্রনালয়, অর্থ মন্ত্রনালয়, ত্রান মন্ত্রনালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় মিলে যদি চায় তাহলে যে মানুষগুলো মরতে যাচ্ছে, তাঁদেরকে বাঁচাতে পারে। তাঁদের গরুছাগল, বীজ ধান, কাপড়চোপড় তো রক্ষা করতে পারবেই।
অথচ দুই একজন ছাড়া এক্ষুণি কেউ নড়ে চড়ে বসবে না। দিন দশেক পরে যখন উত্তরাঞ্চল তলাতে শুরু করবে, তখন হাহাকার শুরু হবে পত্রিকায়। সোশাল মিডিয়ায়, টেলিভিশনগুলো ‘বিজি’ হয়ে যাবে। ফেসবুকের পাতাগুলো ত্রানের আহ্বানে, ত্রান প্রদানের ছবিতে, ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়ার ছবিতে, ছোট্ট শিশুদের, গর্ভবতী মায়ের কষ্টের ছবিতে ভরে উঠবে। আমাদের উপাসনালয়গুলো ভরে উঠবে। সমাজকর্মীরা, এনজিওরা তাড়াহুড়ো করে মাতম তুলবে।
মূলতঃ ধ্বংস যা হবার তা তো হয়েই যাবে। অথচ তখন যে পরিমান খরচ করে ত্রান দেয়া বা উদ্ধার কাজ চালানো হবে, তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ টাকা খরচ করে, ধ্বংশের হাত থেকে অনেকটাই বাঁচা সম্ভব। যে শিশুটি ডুবে মরবে, যে বৃদ্ধা মা জলের তোড়ে ভেসে যাবে, তাঁকে আর ফেরত পাওয়া যাবে?
প্রকৃতির বন্যা আমরা শতভাগ বন্ধ করতে পারবো না, তবে আগে থেকে পদক্ষেপ নিলে ক্ষয়ক্ষতি অর্ধেকের বেশী কমানো সম্ভব। আমরা করছিও। গত পঞ্চাশ বছরের তুলনায় ঝড়ে মৃতের সংখ্যা আমরা ৮০%এর বেশী কমাতে পেরেছি। আরও পারবো।