নিজস্ব সংবাদাতা: নিরাপদ, লাভজনক কৃষি এবং টেকসই খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনের মূল লক্ষ্য নিয়ে দেশের কৃষি সেক্টরে দায়িত্ব গ্রহণ শুরু করেছেন ৩৬তম বিসিএস থেকে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ২৯৭জন বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা। সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটরিয়ামে নবনিয়োগপ্রাপ্ত ক্যাডার কর্মকর্তাদের ০১ (এক) দিনব্যাপী ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা শেষে সদর দপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা থেকে তাদের পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগদানের জন্য শর্তসাপেক্ষে অবমুক্তির আদেশ দেয়া হয়।
আদেশে জানানো হয়, অফিসারগণ পদায়নকৃত কর্মস্থলে আগামী রবিবার (৯ সেপ্টেম্বর-২০১৮) তারিখের মধ্যে যোগদান করবেন। বিসিএস কৃষি ক্যাডার কর্মকর্তাগণ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী এবং কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট-এর মাঠ পর্যায়ের দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। অবমুক্তি আদেশ পাওয়ার পরে নবীন কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেই মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) হতে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান শুরু করেছেন।
অপরদিকে দেশের উপজেলা কৃষি অফিসগুলো চাকুরী জীবনের নতুন কর্মস্থলে নবীনদের আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলা কৃষি অফিসে দেখা যায়, নতুন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসারদের উপজেলা কৃষি অফিসার ও তাঁর অফিস কর্তৃক ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে; আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে; উপজেলার কৃষি ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়াসহ তাদের আবাসিক ব্যবস্থারও বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। কেউ কেউ প্রথম দিনেই উপজেলার বিভিন্ন ব্লক ও প্রদর্শনী ঘুরে দেখাচ্ছেন। অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কর্মস্থলে যোগদান করা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, চাকুরি জীবনের প্রথম দিন সত্যি মনোমুগ্ধকর। মহান পেশায় যোগদান করে দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য যোগান দেয়ার যে চ্যালেঞ্জ আমরা নিতে যাচ্ছি তার শুরুতে উপজেলা কৃষি অফিস ও স্যারদের কাছে যে উষ্ণ অভ্যর্থনা, আন্তরিকতা, আতিথেয়তা, অনুপ্রেরণা এবং দিকনির্দেশনা আমরা পাচ্ছি তা সত্যি অসাধারণ। কর্মস্থলের প্রথম দিন বাকি জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার দেশ-জাতির বৃহৎ স্বার্থেই কৃষির উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আজকের ১৬ কোটি মানুষের দেশ আগামীতে ৩২ কোটি হয়ে যেতে পারে। বিপরীতে আমাদের আবাদি জমির পরিমাণ প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। অধিক জনসংখ্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিপরীতে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখাটা অনেক কঠিন বিষয়। তবু বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগ; কৃষিখাতে প্রকল্প, প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণ, গবেষণা খাতে অর্থলগ্নি এবং সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা হাতে নেয়ায় নিরাপদ, লাভজনক কৃষি এবং টেকসই খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। নবীনদের কথা অনুযায়ী, তারা এমন মহৎ পেশায় যুক্ত হতে পেরে নিজেদের অনেক ভাগ্যবান মনে করছেন।
তারা বলছেন, উপজেলা কৃষি অফিসারের আন্তরিকতা তাদের কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। এ অনুপ্রেরণা তাদের আগামীর পথচলাতে সকল ধরণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে সাহায্য করবে। রূপকল্প-২০২১, এসডিজি ২০৩০ এবং রূপকল্প-২০৪১ পূরণে বর্তমান সরকারের যে পদক্ষেপ রয়েছে তা বাস্তবায়নে নবীন অফিসারেরা প্রুতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকার প্রধানের সঠিক পরিকল্পনায় ও কৃষি মন্ত্রী মহোদয়ের কঠোর নির্দেশনায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ সর্বদা এগিয়ে থাকবে বলে নবীন অফিসারেরা দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন। একই সাথে তারা প্রত্যাশা রাখেন, তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের এই উদ্যম ধরে রাখতে সর্বদা পাশে থাকবে এবং মাঠ পর্যায়ের সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে যথেষ্ট আন্তরিক থাকবে।