সোমবার , নভেম্বর ২৫ ২০২৪

স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সেপটিক ট্যাংক খালি ও অপসারণ করা জরুরি -খুলনা সিটি মেয়র

খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশ বান্ধব নগরী গড়ে তোলার জন্য দৈনন্দিন বর্জ্য অপসারণের পাশাপাশি প্রতি বছর অন্তত একবার বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কি পরিস্কার করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব  দিতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সেপটিক ট্যাংক খালি করা যেমন জরুরী তেমনি তা নিরাপদ প্রক্রিয়ায় অপসারণ করাও জরুরী। এফএসএম গুরুত্বপূর্ণ এ কাজে সহায়তা করে আসছে। রাজবাঁধ ট্রেন্সিং গ্রাউন্ডে নির্মিত শোধনাগারে মানববর্জ্য রিসাইক্লিং-এর মাধ্যমে কম্পোস্ট সারে রূপান্তর করা হলে নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব নগরী হিসেবে খুলনাকে গড়ে তুলতে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এফএসএম নেটওয়ার্ক (বাংলাদেশ ফিক্যাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট) ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে ৩য় ’পয়ঃবর্জ্য কর্মী সম্মেলন’ সোমবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এসব কথা বলেন।

সিটি মেয়র আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রতিক‚লতা মোকাবেলা করে খুলনাকে জলাবদ্ধতামুক্ত বসবাস উপযোগী সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ নগরী সমূহের মধ্যে খুলনাও অবস্থান করছে। সে কারণে আমাদেরকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবেশ, প্রতিবেশসহ প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে হবে।

খুলনা মহানগরীকে জলাবদ্ধতা মুক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এর জন্য বাস্তবভিত্তিক প্রকল্প প্রণয়ণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। জলাবদ্ধতা মুক্ত করার পাশাপাশি ময়ূর নদীকে দূষণমুক্ত করে সৌন্দর্য্য পিপাসু মানুষের জন্য দৃষ্টি নন্দন পরিসর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

খুলনা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে নেদারল্যান্ডস সরকারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিডিআর ইন্টারন্যাশনাল-এর অর্থায়নে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় খুলনা সিটি কর্পোরেশন ২ দিন ব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট প্রতিক‚লতা মোকাবেলায় সংস্থাটি খুলনা মহানগরীসহ দক্ষিণ এশিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি শহরে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কান্তি বালা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, পরিবেশ অধিদপ্তর-খুলনার পরিচালক মো. হাসিবুল হক খান ও ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র মো. সাঈদুর রহমান মিন্টু। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তৃতা করেন, নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক পানি বিশেষজ্ঞ হেনক অভিন্ক ও খুলনা ওয়াসা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ পিইঞ্জি।

কেসিসি’র প্যানেল মেয়র মো. আলী আকবর টিপু, মেমরী সুফিয়া রহমান শুনুসহ কাউন্সিলর, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, কেসিসি’র কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যারয়ের শিক্ষক, বিদেশী বিশেষজ্ঞ ও এনজিও কর্মকর্তাগণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

অন্যান্যদের মধ্যে কেসিসি’র সচিব মো. আজমুল হক, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আব্দুল আজিজ, কঞ্জারভেন্সী অফিসার মো. আনিসুর রহমান, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. স্বপন কুমার হালদার, প্রকল্পের টীম লিডার রাজিভ মুনানকামি, সিটি কো-অর্ডিনেটর মো. এরফান আলী খান, পয়ঃবর্জ্য কর্মী সবুজ জমাদ্দার, সুজন দাস, প্রদীপ দাস প্রমুখ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, প্রকল্পের এ্যাডভাইজার মো. শহিদুল ইসলাম। খুলনা মহানগরীসহ ২১টি পৌরসভার ১২৫ জন পয়ঃবর্জ্য কর্মী সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, সেপ্টিক ট্যাংক পরিস্কার করার জন্য নগর ভবনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫টি ভ্যাকুট্যাগ রয়েছে। হোল্ডিং মালিকগণ কেসিসি’র যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর যোগাযোগ করলে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সেপ্টিক ট্যাংক খালি করা হয়। সম্মেলনে পয়ঃবর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত কর্মী বাহিনীর জীবন মান উন্নয়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের সাথে খুলনা সিটি কর্পোরেশন কাজ করছে বলে উল্লেখ করা হয়।

পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গৃহীত কর্মকৗশল তুলে ধরেন, প্রজেক্ট ডাইরেক্টর জে এইচ ল্যাবইরী এবং ওয়াটার এ্যাজ লেভারেজ-এর টীম লিডার এস টিস্লা।

This post has already been read 3277 times!

Check Also

কপ২৯-এ জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং প্রাক-২০৩০ উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য অর্জনের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান …