মাহফুজুর রহমান (চাঁদপুর প্রতিনিধি): বয়স আনুমানিক ৭০। হালকা গড়ন তবে খুব মিষ্টিভাষী প্রকৃতির। একদম ছোট বেলা থেকেই কৃষিকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। কৃষির উপর প্রশিক্ষণও নিয়েছেন বহুবার। অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন এলাকার অন্যান্য কৃষকদের সাথে। অনেকেই তার কৃষি আবাদ দেখে হিংসে করে কিন্তু রাগ বা অভিমান কিছুই করেন না। আল্লাহর দান হচ্ছে কৃষি ফলন এমনটিই বিশ্বাস করেন তিনি। বলছিলাম চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেলইউনিয়নের বহিরয়া গ্রামের কৃষক মো. জয়নাল শেখের। শনিবার(৮ডিসেম্বর)দুপুরেই দেখা হয় মেঘনা নদীর পাড়ে কর্ম ব্যস্ততায় তার কৃষি জমিতে।
জানালেন ঘুরে দাড়ানোর গল্প। মেঘনা নদীর ভাঙনের শিকার জয়নাল বহুবার। ফসলি জমিগুলো বহুবার গিলেছে মেঘনা,তারপরেও হতাশ হননি তিনি। জমি ও ঘর বাড়ি হারিয়ে কখনো মনোবল হারাননি। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য মানুষের কাছ থেকে বর্গা নিয়েও চাষ করেছেন বিভিন্ন ফসল।
জয়নাল শেখ জানান, একটানা ২০ বছর বোরো ধান আবাদ করেছেন। প্রত্যেকবার তিনি সরকারি কৃষি অফিসারদের সাথে আলাপ করে ধান আবাদ করতেন। এ কারণে অন্যদের তুলনায়তার ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু তাকে নিয়ে মানুষ জন হিংসা করতেন। এতে কিছুই মনে করতেন না তিনি।
এখন বয়স হয়েছে, অবসর থাকার কথা। কিন্তু বেকার থেকে লাভ কি। গত বছর ৪০ শতাংশ জমিতে খিরাই আবাদ করেছেন জয়নাল শেখ। বিক্রি করেছেন প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এ বছরও একই জমিতে খিরাই পাশাপাশি কুমড়া আবাদ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। এ বছর তার খিরাই গাছগুলো ভালো হয়েছে। বেড়ে উঠলে ভালো বিক্রি করার আশাবাদী তিনি। নিজেই জমির পরিচর্চা করেন বেশী। প্রয়োজনে দৈনিক হাজিরার শ্রমিকদেরও নেন কাজে। তবে এলাকার দায়িত্বরত সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহ আলম সব সময়ই তার খোঁজ খবর রাখেন বলে জানান তিনি। কৃষি অফিসারের প্রতি তিনি খুবই সন্তুষ্ট।
কৃষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ নিয়ে যে কোনো ফসল আবাদ করলে ফলন ভাল হবে। প্রাকৃতিক কারণে কোনো সমস্যা হলেও প্রচেষ্টা থাকলে আবার ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।