চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ আইন রয়েছে। কিন্তু নেই কোনো সঠিক প্রয়োগ। এখানে বলা আছে, তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কিন্তু দেশের কোথাও এই আইনের প্র্রয়োগ তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। নগরজুড়ে জুড়ে চলছে ধুমপানের ধুমধাম বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা। প্রশাসন, আদালত, হাসপাতাল, ক্লিনিক, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, দোকান দিন রাত চলছে ধুমপানের বেচাকেনা। এমনকি নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও ধুমপানের বিজ্ঞাপন ও বিক্রি মুক্ত নয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ক্লিন ও গ্রীন সিটিতে রূপান্তরের পরিকল্পনা নিলেও যত্রতত্র দেখা যাচ্ছে ময়লার- আবর্জনার স্তপ। রাস্তায় ধুলাবালি আর নালা ভর্তি ময়লা-আবর্জনা। মানুষ ঘর থেকে ময়লাগুলি ডাস্টবিনে না ফেলে নালা-নর্দমায় ফেলছে। তাই তামাকমুক্ত, ক্লিন ও গ্রীন সিটি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার, হোটেল-রেস্তোরা, দোকান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে এই মারাত্মক সামাজি ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখার জন্য ব্যাপক সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩৭নং উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন বন্ধে করণীয় নিয়ে ওরিয়েন্টেশন আলম বকর জাকারিয়া প্রিপারেটরী স্কুল কমিটির সম্পাদক আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওরিয়েন্টেশনের বিভিন্ন বক্তাগণ উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
বক্তাগণ আরো বলেন, ধুমপান মাদক সেবনের প্রথম সোপান। আর নিজেরা ধুমাপায়ী না হলেও পরোক্ষ ধুমপানের কারণেও সমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যার কারণে ক্যান্সার, হৃদরোগ, হাপানীর মতো প্রাণঘাতি রোগ মহামারি আকারে বেড়েছে। অন্যদিকে তামাকপণ্য সেবনের কোনো উপকারিতা আজ পর্যন্ত আবিস্কার হয়নি। পাড়া মহল্লায় দোকান, হোটেল-রেস্তোরায় প্রবেশ পথে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মুখে যত্রতত্র তামাকপণ্য বিক্রি, প্রদর্শন, বিভিন্ন উপঠৌকন দিয়ে তরুণদের ধুমপানে আকৃষ্ট করে প্রকারান্তরে মাদকাসক্ত করা হচ্ছে। এর ফলে অনেক সম্ভবানাময় তরুণ বিপথে পরিচালিত হয়ে পুরো সমাজকে কুলষিত করছে। তাই তামাক পণ্য বিক্রি ও একাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার। তা না হলে তামাক ব্যবসায়ীদের এ ধরনের কার্যক্রম দেশকে মেধাহীন করে তুলবে।
ওরিয়েন্টেশনে আরো বলা, সরকার মাদক-ইয়াবার বিরুদ্ধে শুণ্য সহনশীলতা প্রদর্শন করলেও চাহিদা থাকায় মাদকের ব্যবসা বন্ধ করা যাচ্ছে না। যেহেতু ধুমপান মাদক সেবন শুরুর প্রথম সোপান। সেহেতু জনবহুল স্থান বিশেষ করে দোকান, হোটেল-রেস্তোরা, হাসপাতাল, আদালত প্রাঙ্গন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাস-ট্রেন স্টেশনে ধুমপান ও বিজ্ঞাপন এবং প্রচারণা বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজ থেকে এই মারাত্মক ব্যাধি নির্মূল করতে সমাজ পরিবর্তনের সাথে যুক্ত সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়। বিজ্ঞাপন, বিক্রি ও প্রচারণা নিষিদ্ধ হলেও প্রকাশ্যে বিড়ি-সিপারেট, পান জর্দা বিক্রি ঠেকানো যাচ্ছে না। তামাক সেবনের অপকারিতা বিষয়ে তরুণ সমাজ ও সাধারণ জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগসহ সামাজিক শক্তিগুলির উদ্যোগ ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
ক্যাম্পইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস’র সহায়তায় পিপলস জুবিল্যান্ট এনগেজমেন্ট ফর টোবাকো ফ্রি চিটাগাং সিটি প্রকল্প, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের আয়োজনে ওরিয়েন্টেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আলম বকর জাকারিয়া, প্রিপারেটরী স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল সাহারা বেগম ও বিটার প্রকল্প সমন্বয়কারী প্রদীপ আচার্য্য। ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় ওরিয়েন্টেশনে আলোচনায় আরো অংশ গ্রহন করেন, ক্যাব মহানগর কমিটির সদস্য আলমগীর বাদশা, সেলিম সাজ্জাদ, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস দেলওয়ার হোসেন প্রমুখ।