ফকির শহিদুল ইসলাম(খুলনা): নদী ভাঙ্গনের তাৎক্ষণিক সমাধান নয়, বরং স্থায়ী সমাধানের কথা ভাবছে সরকার। পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলকে প্রকৃতিক সম্পদে সম্পদশালী বিবেচনা করা হয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক ঝুঁকি বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। বিষয়টিকে কার্যকর ব্যবস্থাপনায় না আনলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও পরিবেশগত অবক্ষয় বিবেচনায় নিয়ে নতুন করে উপকূলীয় পোল্ডার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভাবতে শুরু করেছে সরকার।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে খুলনার এক অভিজাহ হোটেল -এ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ এর ‘বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার দীর্ঘ মেয়াদী পর্যাবেক্ষণ, গবেষণা এবং বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সমীক্ষার ওপর আঞ্চলিক মতবিনিময় কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ক্ষুদ্র প্রকল্পের পরিবর্তে বৃহৎ প্রকল্পের মাধ্যমে নদী শাসন করে অবস্থার পরিবর্তন আনা সম্ভব। বন্যা ও নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা রক্ষায় সময় মতো পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সুনামগঞ্জকে এ মৌসুমে আগাম বন্যা হতে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের ভাবনাকে উন্নয়ন কাজের সময় গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। বৃহৎ নদীগুলোকে ড্রেজিং করে গভীরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নদীর প্রশস্ততা কমিয়ে ভূমি উদ্ধার করে নদীর পাশে ইন্ডাস্ট্রিয়ালজোন সৃষ্টি করা হবে। দেশের অন্য এলাকা হতে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রকৃতি ভিন্ন হওয়ার উপকূলীয় এলাকার জন্য বিদ্যমান সমস্যার সমাধানও ভিন্ন হবে। সবাই মিলে কাজ করলে সমাধান সহজে অর্জিত হবে।
এই কর্মশালার আলোচনা হতে প্রাপ্ত তথ্য বিবেচনায় নিয়ে অন্য সকল প্রকল্পে প্রয়োগের আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের উপকূলীয় এলাকার ১৩৯টি পোল্ডারকে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে টেকসই ব্যবস্থাপনার আওতায় আনলে এ অঞ্চলে বসবাসকারী দেশের ২৬ শতাংশ বা তিন কোটি ৮০ লাখ মানুষ উপকৃত হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার, খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) নিশ্চিন্ত কুমার পোদ্দার ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ এর প্রকল্প পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান।