শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

বাঁশ কোড়লের স্বাস্থ্য উপকারিতা ও মজাদার রেসিপি

পাপিয়া আকতার: বাঁশের কোঁড়ল শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামেই নয়,  সিলেটেও সমান জনপ্রিয়। তবে বিশ্বে বাঁশের কোঁড়ল সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় জাপানে। বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, বিশ্বে প্রতিবছর বাঁশখাদক লোকদের কাছে বাঁশের কোঁড়লের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৫০ হাজার টন।

বিশ্ব বাজারের প্রায় ৭০ শতাংশ বাঁশের কোঁড়লের ক্রেতা জাপান। আর সবচেয়ে বেশি বাঁশের কোঁড়ল উৎপন্ন হয় চীনে। চীন প্রতিবছর বিশ্বের ৩৭টি দেশে গড়ে ১৩৭ হাজার টন টিনজাত বা প্যাকেটজাত বাঁশের কোঁড়ল রপ্তানি করে থাকে। কোরিয়া,  জাপান, হংকং, সিঙ্গাপুর, জার্মানী, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইডেন প্রভৃতি দেশে বাঁশের কোঁড়লের প্রচুর চাহিদা ও বাজার রয়েছে। এসব দেশ ছাড়া ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশেও বাঁশের কোঁড়ল জনপ্রিয় খাদ্য।

চীনারা বাঁশের কোড়লকে বলেন ‘স্বাস্থ্যকর খাবারের রাজা।’ তাজা বাঁশের কোঁড়লে ৮৮-৯৩% পানি, ১.৫-৪% প্রোটিন, ০.২৫-০.৯৫% চর্বি, ০.৭৮-৫.৮৬% চিনি, ০.৬০-১.৩৪% সেলুলোজ এবং ১.১% খনিজ পদার্থ আছে। ভিটামিনও আছে।

বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে যে বাঁশের কোঁড়ল দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমায় ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, হাঁপানী, ডায়াবেটিস, তীব্র জ্বর, মৃগি রোগে মূর্ছা যাওয়া ইত্যাদি নিরাময়েও যথেষ্ট অবদান রাখে। তাই যেকোনো সবজির সাথে তুলনা করলে বাঁশের কোঁড়ল কোনোভাবেই হেলাফেলার নয়।

নিম্নে বাঁশ কোড়লের কয়েকটা রেসিপি দেয়া হলো: প্রথমে বাঁশের কোড়লের উপরের সবুজ শক্ত অংশটাকে সরিয়ে ফেলতে হবে। সবুজ শক্ত অংশ সরানো অবস্থায়ও অনেক জায়গায় বাঁশের কোড়ল কিনতে পাওয়া যায়। যাইহোক, এরপর আপনার প্রয়োজনমত ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে ভালো করে পানিতে ধুয়ে একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাতে বাঁশ কোড়ল সিদ্ধ করবেন। সিদ্ধ করার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নেবেন। এই সিদ্ধ হওয়া বাঁশ কোড়ল বিভিন্ন আইটেমে রান্না করে খেতে পারবেন। কয়েকটা নিম্নরুপ:

১. পুঁইশাকের সাথে : একটি পাত্রে পরিমাণমত পানি নিয়ে তাতে শুটকি, পেঁয়াজ, মরিচ ও পরিমাণমত লবণ দেবেন। পাহাড়িরা এই আইটেমে ছাঁকা নাপ্পির পানি দিয়ে থাকে। নাপ্পি হল পাহাড়িদের তরকারী রান্নার প্রিয় একটি মশলা যা মাছ,  চিংড়ি, কাঁকড়া দিয়ে তৈরি করা হয়। লক্ষ্য রাখবেন এই আইটেমে হলুদ গুঁড়া দেয়া হয় না। এরপর এটি চুলায় বসিয়ে ৪-৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে । পানিটা ফুটতে থাকলে এতে বাঁশ কোড়ল দিতে হবে। এর ১০-১৫ মিনিট পর এতে হালকা পুঁইশাক দিতে হবে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর রান্নাটা হয়ে আসবে।

২. শুধু বাঁশ কোড়ল : সিদ্ধ করা বাঁশ কোড়ল কুচি কুচি করে কেটে তেল দিয়েও রান্না করে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে একটি পাত্রে পরিমাণমত তেল ‍দিয়ে চুলায় বসাতে হবে। পেঁয়াজ একটা কুচি করে কেটে শুটকি তেলে ভাজাতে হবে। কিছুক্ষণ ভাজার পর কুচি করে কাটা বাঁশ কোড়ল দিতে হবে। এতে লবণ ও হালকা লাল মরিচের গুঁড়া মেশাতে হবে। এরপর সামান্য পানি দিয়ে ঢেকে মিডিয়াম তাপে রান্নাটা করে নিতে হবে। চাইলে আপনারা শুটকি ভাজার স্থানে টাটকা চিংড়ি ভাজিয়েও দারুণ স্বাদের রান্না করে নিতে পারেন। এর জন্য হালকা জিরা গুঁড়া মেশাতে হবে

This post has already been read 9748 times!

Check Also

আন্তর্জাতিক ওয়ান হেলথ ডে উদযাপিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, …