শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

খামারি বাঁচাও দেশ বাঁচাও

ঢাকা (২৮ জুন): জীবন ও জীবিকার তাগিদে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছেন সারাদেশের পোল্ট্রি খামারিরা। “খামারি বাঁচাও, দেশ বাঁচাও” স্লোগানে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় মানব বন্ধন করেছেন তাঁরা। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় নিজেদের দাবি আদায়ে পথে নেমেছেন প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারিরা। তাঁরা চান স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ, কম দামে পোল্ট্রি ফিড ও একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চা এবং ডিম ও মুরগির ন্যায্য দাম। খামারিরা মানব বন্ধন করেছেন রাজশাহী, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, বরিশাল, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, খুলনা, ময়মনসিংহ, বগুড়া, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, সিলেট, রংপুর, যশোর, ঠাকুরগাঁও, জয়পুরহাটসহ বেশ কিছু জেলায়।

তাঁদের দাবি কৃষিখাতের মত পোল্ট্রিতেও ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হোক, শষ্য বীমার মতই পোল্ট্রি বীমা চালু করা হোক, বিদ্যুতের রেট কমানো হোক, ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হোক। সারাদেশে মানব বন্ধন আয়োজনের অন্যতম কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তাঁরা তেমন কিছুই পাননি। পোল্ট্রি ফিডের দাম কমবে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রচারিত হলেও আসলে বাস্তবতা ভিন্ন। ফিডের দাম তো কমবেই না উল্টো বাড়বে বলে আশংকা তাঁদের। কারণ প্রস্তাবিত বাজেটে ভূট্টা আমদানিতে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর কিংবা সয়াবিন মিল আমদানিতে ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি প্রত্যাহার করা হয়নি উপরন্তু সব ধরনের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, ঔষধ এমনকি জিপি ও পিএস বাচ্চা আমদানিতে ৫ শতাংশ হারে আগাম কর (এ.টি) বসানো হয়েছে; এর পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল আমদানিতে ২ থেকে ৫ শতাংশ হারে উৎস কর কর্তনের বিধান পুনরায় চালু করা হয়েছে।

খামারিরা বলছেন, আপাত বিচারে মনে হতে পারে এগুলো ফিড ইন্ডাষ্ট্রি’র সাথে সম্পর্কিত কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের এ সকল সিদ্ধান্তের দায়ভার সম্পূর্ণভাবে এসে পড়ছে ক্ষুদ্র ও তৃণমূল খামারিদের উপর। তাঁরা বলছেন পোল্ট্রি’র ডিম ও মাংস উৎপাদনের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ খরচ হয় পোল্ট্রি ফিডে। তাই ফিড উৎপাদনে খরচ বাড়লে সে টাকা তাঁদেরকেই গুনতে হয়। খামারিরা আরো বলছেন, বিগত বছরগুলোতে ফিডের দাম এবং সেই সাথে পোল্ট্রি’র উৎপাদন খরচ বাড়লেও বাড়েনি ডিম ও মুরগির দাম। বছরের প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে ডিম ও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁদের। গরু ও খাসির দাম একবার বাড়লে তা আর কমে না কিন্তু আজ যে মুরগির দর ১৩০ টাকা, কালকেই তা ৯০ টাকায় নেমে যাচ্ছে। সারা বছর জুড়েই যেন ডিম ও মুরগির দরের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে তার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ খামারিরা।

তাঁরা বলেন, খামারি বলে তাঁদের কে অবজ্ঞা করা ঠিক নয়। কারণ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, কখনও জমি-জমা বিক্রি করে; আবার কখনও ডিলার, মহাজন, এজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পোল্ট্রি খামার করে দেশের মানুষের জন্য আমিষের যোগান দিচ্ছেন তাঁরা। পোল্ট্রি খামার ধ্বংস হয়ে যাওয়া মানে সারাদেশের প্রায় ৬০ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকার পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া। তাই পোল্ট্রি শিল্প ও খামারিদের জন্য আরও সাহায্য সহযোগিতা বাড়ানোর দাবি জানান খামারিরা।

This post has already been read 12238 times!

Check Also

ডিমের মূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মধ্যস্বত্বভোগীরা বড় সমস্যা- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

পাবনা সংবাদদাতা: ডিমের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মধ্যস্বত্বভোগীরা বড় সমস্যা উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা …