ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): উপকূলীয়-লবণাক্ত এলাকার মানুষের জন্য সুপেয় পানির প্রাপ্যতা সহজ করতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে রিভার্স-অসমোসিস সহ সকল কার্যকর প্রযুক্তি অনুসরণ করা হবে। কিছু দিনের মধ্যে খুলনা ওয়াসার পানি শোধানাগার চালু হবে। মানুষের এখন অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে। উন্নত সেবা পেতে হলে বিশুদ্ধ পানির জন্য ব্যয় একটু বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার (১ আগষ্ট) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ’উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পানির ন্যায্যতা‘ প্রতিপাদ্য নিয়ে দুই দিনব্যাপী দ্বিতীয় উপকূলীয় পানি সম্মেলনের উদ্বোধনকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এম.পি এসব কথা বলেন। সরকারি-বেসরকারি ৪৫টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
তিনি আরো বলেন, ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ ভাটি অঞ্চলভুক্ত পলির দেশ। এ অঞ্চলে টিকে থাকার জন্য বহু চ্যালেঞ্জ নিতে হয়। অতীতে দেশে তীব্র দারিদ্র্য ছিল, যা দূর করতে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন; উন্নত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ক্ষমতায় এসেছেন। আমরা এসডিজি অর্জনের মাধ্যমে বিশ^কে তাক লাগিয়ে দিয়েছি, এসডিজি অর্জনেও সফলতা আসবে। ঢালাওভাবে উন্নয়ন কাজ না করে প্রয়োজনের ভিত্তিতে স্থায়ী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। টিকে থাকতে হলে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, হতাশ হলে চলবে না। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকার কাজ করছে। সরকারের কাজের সুফল সাধারণ মানুষ পাবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশের সাত কোটি মানুষ ঝুঁকিতে আছে। দেশের মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে। পাশাপাশি দেশের পানযোগ্য পানির ৪২ শতাংশ ক্ষতিকর অনুজীবের মাধ্যমে দূষিত। এর সাথে উপকূলীয় ১৯ জেলার ৩ কোটি ৫০ লাখ জনসাধারণ সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা ও আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে বাস করছে। বিশে^র সমস্ত পানির দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ স্বাদু, যার ৭৫ শতাংশ মেরু অঞ্চলে বরফ আকারে আছে। পৃথিবীর ২০ শতাংশ মানুষ পানির সংকটের আছে এমন এলাকায় বাস করে এবং এ গ্রহে থাকা মোট পানির কেবল এক শতাংশই পানযোগ্য ও স্বাদু।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলমগীর। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এম.পি, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সমন্বয়ক ফ্রেড হুইটেভিন।
এর আগে সাংবাদিক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার চার জন সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন, আক্তারুজ্জামান বাবু ও মোস্তফা লুৎফুল্লাহ উপকূলীয় জনসাধারণের সাথে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।