নিজস্ব প্রতিবেদক: কাপ্তাই লেকে আশঙ্কাজনকভাবে কমছে কার্প জাতীয় মাছ। আগে যেখানে লেকে কার্পজাতীয় মাছের উৎপাদন ছিল ৮৫% সেটি বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ৫%। অথচ লেকে নিয়মিতভাবে কার্পজাতীয় মাছের পোনা ছাড়া হচ্ছে। অন্যদিকে ছোটমাছের পরিমান ব্যাপক হারে বাড়ছে। বিষয়টিকে অস্বাভাবিক বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (BFDC) এর উদ্যোগে ফার্মগেটেস্থ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘কাপ্তাই-হ্রদে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং মৎস্যচাষ কলাকৌশল’ বিষয়ক এক কর্মশালায় উপস্তিত বক্তারা এসব তথ্য এবং আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন। এজন্য তাঁরা কার্পজাতীয় মাছের যথাযথ বৃদ্ধির পূর্বেই চোরাপথে পোনাসহ অন্যান্য মাছের ব্যাপক নিধনযজ্ঞকে দায়ী করেন।
সরকারি অবতরণ কেন্দ্রসমূহকে এড়িয়ে লেকের ধৃত চোরাই মাছ বাজারে চলে যাওয়ায় লেকে উৎপাদিত মাছের সঠিক তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না বলে তারা আশংকা প্রকাশ করেন।
বক্তারা, লেকে মৎস্যচাষের উন্নত ব্যপস্থাপনার ওপর জোর দেন এবং গুণগতমানসম্পন্ন পোনা ও খাদ্য সরবরাহের পরামর্শ দেন। লেকের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বাইরে থেকে পোনা আনার বদলে লেকেই পোনার অটো-স্টকিং বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, এমপি তাঁর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, লেকে ছোট মাছের আধিক্য থাকলে সেখানে কার্পজাতীয় মাছের বৃদ্ধি সম্ভব নয়। তাই কাপ্তাই লেকের ছোট মাছের সংখ্যা দ্রুত কমাতে হবে, যাতে লেকের খাদ্যের স্টকও বাড়ে।
এছাড়াও তিনি লেকের অবৈধ মাছ ধরা এবং অবতরণ কেন্দ্রের বাইরে চোরা পথের মাছ সরবরাহ রোধ করতে চেকপোস্ট বাড়াতে বিএফডিসিকে নির্দেশ দেন। লেকের কার্পজাতীয় মাছের উৎপাদন ও গুণগতমান বাড়াতে লেকের উৎপাদিত পোনাই আবার লেকে ছাড়ার পরামর্শ দেন। কাপ্তাই-লেকের অভয়াশ্রম এবং অবতরণকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়াতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান দিলদার আহমদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইআইইউসি বাংলাদেশ -এর প্রভিসি ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সচিব সাজ্জাদুল হাসদান, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াসি উদ্দিন, যুগ্মসচিব তৌফিকুল আরিফ, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মো. রাশেদুল হক, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ প্রমুখ।