সোমবার , নভেম্বর ২৫ ২০২৪

স্বল্প জীবনকালের বিনা ধান-১৭ আবাদের আহ্বান কৃষকদের

পাবনা সংবাদদাতা: স্বল্প মেয়াদি জীবনকাল, ফলনশীল,পানি ও সার সাশ্রয়ী, চাউল চিকন, ভাত সুস্বাদু নানাবিধ কারণে বিনা ধান-১৭ জাতটি আবাদ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বিনা ধান-১৭ কর্তন,  প্রচার ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আয়োজিত মাঠ দিবসে এ আহ্বান জানান উপস্থিত বক্তারা। মঙ্গলবার (১২নভেম্বর) পাবনা জেলার সদর উপজেলার ধর্মগ্রামে উক্ত মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপ-পরিচালক  কৃষিবিদ মো. আজাহার আলী বলেন, বিনা ধান-১৭ জাতটির জীবনকাল ১১০-১১৫ দিন হওয়ায় কৃষকদের জন্য রোপা আমন মৌসুমে এর চাষ খুবই উপযোগী। জাতটি অন্যান্য ধানের চাইতে ফলনশীল,পানি ও সার সাশ্রয়ী, চাউল চিকন, ভাত সুস্বাদু। অন্যান্য ধানের চাইতে এটি স্বল্প মেয়াদি হওয়ায় যথাসময়ে রবি শস্য সরিষাসহ অন্যান্য আবাদ দ্রুত করা সম্ভব বলে উপস্থিত কৃষক-কিষানীদের এর আবাদ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঈশ্বরদী পরমাণু কৃষি উপকেন্দ্রের  উধ্বর্তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা  কৃষিবিদ ড. মো. রোকনুজ্জামান বিনা ধান-১৭ জাতটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট সম্পর্কে বলেন, ধান চাষে জীবনকাল স্বল্পমেয়াদি হওয়ায়  জমিতে ২০-২৫দিন বয়সের চারা রোপন করা যায়, জীবনকাল স্বল্প মেয়াদি হওয়ায়  ৩০% পানি কম লাগে এবং ২০% ইউরিয়া সাশ্রয়ী হয়। সঠিকভাবে যত্ম-পরিচর্যা নিলে গড় ফলন হেক্টরে ৬.৫-৭ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। বিনা ধান-১৭ জাতটির আবাদ বাড়ানোর জন্য তিনি উপস্থিত কৃষক-কিষানীদের অনুরোধ জানান। অন্যান্যের মধ্যে পাবনা কৃষি তথ্য সার্ভিস,আঞ্চলিক অফিসের কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, বৈশিষ্ট্যগত কারণে অন্যান্য ধানের চাইতে এর প্রতি শীষে ২০০-২৫০ টি দানা থাকে, এবং ফলন আশাব্যঞ্জক হওয়ায় কৃষকের জন্য এ জাতের ধান চাষ খুবই লাভজনক বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে সংশিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিনা ধান-১৭ জাতটি, বিনা ধান-৭ এর চাইতে তুলনামূলক ফলন বেশী বলে এলাকায় বর্তমান রোপা আমন মৌসুমে এর আবাদ বেশি হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এলাকার কৃষকেরা এবার নিজেরা নিজের বীজ রেখে আগামীতে এ জাতের চাষ বাড়াবে বলে তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

পাবনা সদর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ঈশ্বরদী পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনাস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  উপ-পরিচালক  কৃষিবিদ মো. আজাহার আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনাস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  অতি:উপ-পরিচালক  কৃষিবিদ মো. শামসুল আলম,বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট ঈশ্বরদীস্থ উপকেন্দ্রের উধ্বর্তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা  ড. মো. রোকনুজ্জামান, পাবনা কৃষি তথ্য সার্ভিস, আঞ্চলিক অফিসের আঞ্চলিক কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ প্রশান্ত কুমার সরকার, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এ.এ. মাসুম বিল্লাহ ও ঈশ্বরদী পরমাণু কৃষি উপকেন্দ্রের  বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা  কৃষিবিদ কামরুন নাহার । এতে সভাপতিত্ব করেন আদর্শ চাষি মো. আনিছুর রহমান পেনু।

অনুষ্ঠান শেষে মো. চুন্টু শেখ এর জাত প্রদর্শনী প্লটের ধান আগত চাষীদের দেখানো হয় এবং প্রদর্শণী প্লটের ধান নমুণা কর্তন করে ঝাড়াই-মাড়াই শেষে হেক্টর প্রতি প্রায় ৬.৩ মে.টন ফলন রেকর্ড করা হয়। আগত চাষীদের সকলেই  এ জাতটি আবাদের সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং দ্রুত বীজ সরবরাহের আবেদন জানান। অনুষ্ঠানে প্রায়  শতাধিক কৃষক/কৃষাণী  উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 4876 times!

Check Also

মুড়িকাটা পেয়াজ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে ফরিদপুরের কৃষক

আসাদুল্লাহ (বরিশাল) : ফরিদপুরে প্রতি বছর আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করা হয়। এবারও ফরিদপুরে …