শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

বায়ূ দূষনে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে চট্টগ্রাম নগরী

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: একজন ধুমপায়ী তামাক সেবনের কারনে তার নিজের যে পরিমান ক্ষতি করেন, ধুমপানের ক্ষতিকর বায়ু ছড়ানোর মাধ্যমে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি করেন শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের। একইভাবে বায়ু দূষণের কারণে শিশু ও মা’দের হাপানী, এ্যাজমা, ক্যান্সার, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, শিশুর মেধা বিকাশ, জন্ডিসসহ নানা জঠিল রোগের প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। ক্রমাগত বায়ু দুষণের কারনে দেশের বানিজ্যিক রাজধানীখ্যাত চট্টগ্রাম ক্রমেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) নগরীর জামালখানস্থ আমেরিকান কর্নার মিলনায়তনে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) চট্টগ্রাম ও আমেরিকান কর্নারের যৌথ উদ্যোগে চট্টগ্রাম নগরীর বায়ুর মান নির্ণয় ও বায়ু দূষন রোধে করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

বক্তাগণ বায়ু দুষণের মূল কারণগুলোর মধ্যে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা স্তুপ, সমন্বয়হীন উন্নয়ন কর্মকান্ড, উন্নয়ন কর্মকান্ডে পরিবেশ সংরক্ষনের জন্য পৃথক বরাদ্ধ রাখা ও তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা, বিভিন্ন শিল্প কারখানার কালো ধুয়া নির্মগন, শিল্প বজ্য, পাহাড় কাটা ও ইট ভাটার ধুয়া ইত্যাদিকে দায়ী করেন।

তাঁরা বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য পরিবেশ ছাড়পত্র বাধ্যতামুলক এবং পরিবেশ সংরক্ষনের জন্য পৃথক বরাদ্ধ রাখার বিধান থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তর শুধুমাত্র নোটিশ দিয়ে দায়িত্ব শেষ করছে। ফলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন মানছে না খোদ সরকারী সংস্থাগুলি, বিশেষ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, টিএন্ডটি, কর্নফুলী গ্যাস ও সিটি কর্পোরেশন এর উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিয়োজিত ঠিকাদারগন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে পুরো নগরবাসীকে।

তাঁরা আরো বলেন,বায়ু দুষণের ফলে বসবাস অযোগ্য নগরীর মধ্যে অন্যতম হিসাবে চট্টগ্রামের নাম উঠে এসেছে। এ অবস্থায় বায়ু দূষণ রোধে দ্রুত এ দূষণের সাথে জড়িত সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়গুলি কঠোর ভাবে অনুসরণে বাধ্য করা ও সাধারন জনগনের মাঝে এ বিষয়ে অনুসরনীয় বিধি বিধানগুলি মেনে চলার আহবান জানানো হয়েছে।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ঠ শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. বাসনা মহুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি ও এনভায়রনমেন্ট সাইন্স এর অধ্যাপক মোশারাফ হোসেন, সরকারী মহসিন কলেজের অধ্যাপক ও কর্নফুলী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক শাহাব উদ্দীন, পরিবেশ অধিদপ্তরের কেইজ প্রকল্পের সমন্বয়কারী নূর হোসেন, দেশ টিভির বুর‌্যো চীপ আলমগীর সবুজ। আমেরিকান কর্নারের পরিচালক রুমা দাসের স্বাগত বক্তব্যে আলোচনায় অংশনেন মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, রোটারিয়ান তারিক, ক্যাব আকবর শাহ থানার সভাপতি ডাঃ মেজবাহ উদ্দীন তুহিন, ক্যাব হালিশহরের এম এ আজিজ, এমদাদুল ইসলাম সৈকত, অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন, শিক্ষিকা সালমা জাহান, ক্যাব জামালখানের নবুয়ত আরা সিদ্দিকী, হেলাল চৌধুরী, সালাহ উদ্দীন আহমদ, ক্যাব পাহাড়তলীর হারুন গফুর ভ্ইুয়া, ক্যাব চান্দগাঁও এর জানে আলম, অধ্যক্ষ মনিরুজ্জমান, আবু ইউনুচ, ক্যাব খুলসীর লায়ন প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান, রুখসানা আখতারুন্নবী, ক্যাব সদর ঘাটের শাহীন চৌধুরী, নারী নেত্রী সায়রা বেগম, রেবা বড়ুয়া, যর্ণা বড়ুয়া, জেলা স্কাউটস’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহনেওয়াজ আলী মির্জা প্রমুখ।

This post has already been read 4304 times!

Check Also

ভেটেরিনারি ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব) এর বিক্ষোভ সমাবেশ

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামলীগের বিদায়ের তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে …