ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে রূপসা, ভৈরব, ময়ূর নদীসহ মহানগরী সংলগ্ন খালগুলি ভরাট হয়ে গেছে। এর মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ময়ূর নদীসহ ২২টি খাল খনন করতে হবে। ইতোপূর্বে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে ময়ূর নদী খনন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সঠিকভাবে কাজ না হওয়ায় তা কোন কাজে আসেনি। আগামীতে খনন কাজসহ সব কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।
সিটি মেয়র সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে ‘ইনসেপশন রিপোর্ট ওয়ার্কশপ’-এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবেলায় প্রকল্প গ্রহণের উদ্দেশ্যে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এ কর্মশালার আয়োজন করে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, সুষ্ঠুভাবে নগরীর উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন এবং প্রয়োজনীয় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য কেসিসির হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে হবে। উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের সকল সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা দরকার।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রতিকূলতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলীয় এলাকার মানুষ প্রায়শ:ই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আর এই সব ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে নগরীতে বসবাস করছে। দুর্যোগ পীড়িত ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কল্যাণে খুলনা সিটি কর্পোরেশন জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় জলবায়ু পরিবর্তন সহিষ্ণু প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
কর্মশালায় সিটি মেয়র আরো বলেন, জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (কেএফডব্লিউ) মাধ্যমে অভিযোজিত নগর উন্নয়ন (সিসিএইউডি), বিশেষ করে শহরের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং সক্ষমতা বিকাশের দিকে জোর দিয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে। প্রকল্পটি সিসিইউডি’র দ্বিতীয় ধাপের একটি অংশ যা বৃষ্টির পানি নিস্কাশন এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া খুলনার জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে জলবায়ু অভিযোজন ব্যবস্থার বাস্তবায়নের জন্য একটি সম্ভাব্যতা যাচাই এবং পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব নির্ধারণের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। প্রকল্পের ক্ষেত্রটি খুলনা সিটি কর্পোরেশন-এর ৪৫ বর্গকিলোমিটারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা নিয়ে গঠিত হচ্ছে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কান্তি বালা’র সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রধান প্রকৌশলী মো. এজাজ মোর্শেদ চৌধুরী। কেসিসি’র প্যানেল মেয়র মো. আমিনুল ইসলাম মুন্না, মো. আলী আকবর টিপু, মেমরী সুফিয়া রহমান শুনু, কাউন্সিলর শেখ মোসারাফ হোসেন, মো. আনিছুর রহমান বিশ্বাষ, শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, মো. হাফিজুর রহমান মনি, আশফাকুর রহমান কাকন, শেখ মো. গাউসুল আজম, আলহাজ্ব ইমাম হাসান চৌধুরী ময়না, মো. গোলাম মাওলা শানু, ফকির মো. সাইফুল ইসলাম, এস এম খুরশীদ আহম্মেদ টোনা, মো. মনিরুজ্জামান, মুন্সী আব্দুল ওয়াদুদ, এম.ডি মাহফুজুর রহমান লিটন, শেখ মোহাম্মদ আলী, মো. কবির হোসেন কবু মোল্যা, মো. সাইফুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রাজ্জাক, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মনিরা আক্তার, সাহিদা বেগম, রহিমা আক্তার হেনা, পারভীন আক্তার, শেখ আমেনা হালিম বেবী, মাহমুদা বেগম, কনিকা সাহা, মাজেদা খাতুন, লুৎফুন নেছা লুৎফা, খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, কেসিসি’র প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আব্দুল আজিজ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান, আর্কিটেক্ট রেজবিনা খানম, সহকারি প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ হোসেন প্রমুখ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন কেসিসি’র চীফ প্লানিং অফিসার আবির উল জব্বার, পটভূমি বর্ণনা করেন ক্লাইমেট চেঞ্জ এডাপটেড আরবান ডেভেলপমেন্ট (সিসিএইউডি)-এর টীম লিডার সবুজ ইকবাল, বিষয়ভিক্তিক বক্তব্য তুলে ধরেন নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজের আরভিও সান্দ্রা স্কুফ ও কেএফডব্লিউ’র সিনিয়র আরবান রিজেলিয়েন্স স্পেশালিষ্ট এস এম মেহেদী আহসান।