ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : বিশ্বের একমাত্র ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় কাজ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। এ লক্ষে বনজ সম্পদ এবং বন্যপ্রাণীসহ জীব বৈচিত্র্যের জন্য করণীয় সকল কিছুই করতে চায় দেশটি। সুন্দরবন ঘুরে এসে একথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইরাল আর মিলার। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল টানা দু’দিন পূর্ব সুন্দরবনের বিভিন্ন পর্যটন স্পর্ট ও বনের নদী-খালের দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন ও বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেন। পরে মঙ্গলবার সকালে সুন্দরবনের পেশাজীবী ও বন সংলগ্ন বাসিন্দাদের সঙ্গে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় করণীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মেকাবেলায় সুন্দরবনের গুরুত্ব তুলে ধরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাব বিচেনায় রেখে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এখনই কাজ করা জরুরি। বিশেষ করে সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, বাঘ সুরক্ষা না হলে বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে না। তাই পুরো সুন্দরবনের মৎস্য ও বনজ সম্পদসহ সকল বন প্রাণি সংরক্ষণ করতে হবে। বনের বাঘসহ বন্যপ্রাণি রক্ষায় যা কিছু করণীয় তা তার দেশ থেকে সহায়তা করা হবে বলেও জানান মার্কিন এ রাষ্ট্রদূত ।
সুন্দরবন ও বন্যপ্রাণি রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অর্থায়নে চলা কয়েকটি সংগঠনের সাথেও বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এ সময় মোংলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি ঘোলে ভিলেজ টাইগার রেসপঞ্জ টিমের বাঘ তাড়ানো কার্যক্রম দেখেন এবং পর্যালোচনা করেন তিনি। এরপর বৈঠক করেন ওয়াইল্ড টিম, বাঘ বন্ধু, ইউএসআইডি ও সিএমসি সংগঠনের সদস্যদের সাথে। তিনি সুন্দরবনের বর্তমান প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। সুন্দরবনে গবেষণা এবং যৌথ অংশীদারত্ব কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে রাষ্ট্রদূত মিলার ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বন বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাত করেন।
সুন্দরবন পরিদর্শনকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন মিস মিসিলা রিনি এ্যাডেলমেন, মিশন পরিচালক ডিরাক ব্রাউন, মার্কিন বিশেষজ্ঞ সুমাইয়া ফিরোজ, প্রাকৃতিক গবেষক মিসেল ওয়েভার, ড. অসিকুর রশিদ, জোর্স স্পিনাল, তানভীর মাহমুদ, মিথিলা ফরিদ, দেলোয়ার হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও ওয়াল্ড টাইগার টিমের সিইও ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম ও পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন। এছাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি নয়ন কুমার রাজবংশি, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আসিফ ইকবাল তার সাথে ছিলেন। এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি হেলিকপ্টার যোগে মোংলায় আসেন রাষ্ট্রদূত ইরাল আর মিলার। দুই দিন বিলাসবহুল লঞ্চে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুনরায় হেলিকপ্টার যোগে মোংলা ত্যাগ করেন।