কাকলী খান: দেশের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধান কাটা নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, একই সংকট পড়েছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের গাংগাইরের কৃষকরা। যদিও কোন কোন এলাকায় সরকারের নির্দেশে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে সেচ্ছাসেবি টিম। কিন্তু এই এলাকায় এখনো কোন সহযোগিতা পাচ্ছে না কৃষক।
চাপড়া বিল,বড়বিল, হিলজুরি, নেদার বিলে প্রায় পাঁচ হাজারের অধিক কৃষক বোরো ধান আবাদ করে থাকেন। মহা বিপদে পড়েছে এখানকার কৃষকরা।
জানা যায়, এলাকাটিতে বছরে একটিই ফসল হয় যা হলো বোরো ধান। বছরে এই এক ফসল দিয়ে তারা তাদের সারা বছরের জীবিকা নির্বাহ করে। ২৮ ও ২৯ জাতের ধান ছাড়াও স্থানীয় জাতের কিছু ধান কালিবোরো, জাগলি বোরো, ধলা বোরো ইত্যাদি চাষ করেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা । সাধারণত অগ্রহায়ণ পৌষ মাসে এই ধান রোপন করেন এবং বৈশাখ মাসে এই ধান কাটা হয়। প্রতি বছর ধান কাটার জন্য কৃষি শ্রমিকেরা আসেন রসুলপুর, হাদিপুর,রংপুর, কুড়িগ্রাম থেকে। বছরের এই সময়টাতে তারা ধান কাটার জন্য দলবেঁধে আসে। কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে জেলার বাইরের কামলা (স্থানীয় ভাষাষ) যেমন আসতে পারছেনা তেমনি কামলাদের আসাও নিরাপদ নয় মনে করছেন কৃষকেরা!
একই সাথে সবার ধান উঠেছে। এদিকে ধান কাটার সময় পার হয়ে যাচ্ছে, কৃষক কোন শ্রমিক পাচ্ছে না! তাদের একার পক্ষে এতো ধান কাটা সম্ভব না। একদিকে করোনা ভয় অন্যদিকে খাদ্য বিনে অনাহারে মরার ভয়! সন্তানদের মুখে দুমুঠো ভাত যেন তুলে দিতে পারে, তার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। নিজেরাই যতটুকু ধান কাটতে পারে। তাদের অনেকেই বলছে, অন্তত নিজের পরিবারের জন্য যতটুকু দরকার সেই পরিমাণেও যদি ধান কাটতে পারে, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। যদি বৃষ্টি হয় তাহলে পুরো ফসল পানির নিচে চলে যাবে। চোখের পানি আর কষ্ট নিয়ে তারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে করোনার কারণে প্রশাসন থেকে বাইরে বের হলে তাদের জরিমানা করছে, এর মধ্যেও পেটের তাগিদে এবং সারাবছর কষ্ট করে নিজেদের ফলানো ফলস চোখের সামনে নষ্ট হয়ে যাবে ভাবতেও পারছেনা তারা।