বুধবার , ডিসেম্বর ১৮ ২০২৪

রাজশাহী জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

মো. আমিনুল ইসলাম (রাজশাহী) : এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে রাজশাহী জেলায়। উত্তরাঞ্চলের এই জেলা বরেন্দ্র এলাকা হিসাবে পরিচিত। এ অঞ্চলের কৃষকরা এবার বোরো ধান চাষ কে স্বপ্ন হিসাবে দেখছেন। এই জেলার ৯টি উপজেলার প্রতিটি মাঠের বুকে এখন লাল সবুজের সমারোহ। দিগন্ত মাঠজুড়ে যে দিকে তাকায় সাজানো সোনালী ধানের শীষ। এ সমারোহ দেখে যেনো হৃদয় জুড়িয়ে যায় । ইরি বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের মুখে যেন হাসির ঝিলিক। বর্তমানে এই জেলার প্রতিটি মাঠ কৃষকদের আনন্দে মুখরিত করে তুলেছে। অল্প পরিসরে ধান কাটা শুরু হয়েছে দেখে কৃষকরা অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে কৃষকের মাথায় হাত ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না । কৃষকরা বর্তমানে দু-নয়ন ভরে স্বপ্ন নিয়ে ভালো আবহাওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ইরি বোরো মৌসুমে ৯টি উপজেলায় ২০১৯/ ২০ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা ২লাখ ৬৫ হাজার ২৫০ হেক্টর ধরা হয়েছে ৷ অর্জিত লক্ষমাত্রা  ২লাখ ৬৬ হাজার ২৬৬ হেক্টর ৷ অর্থাৎ এ বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০১৬ হেক্টর বেশি, ইতিমধ্যে কিছু ধান কর্তন করা হয়েছে৷ তার ফলন পাওয়া গেছে প্রতি বিঘায় ২০ মন ৷ উফশী জাত যেমন, ব্রিধান ২৮,২৯ এগুলো আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে কর্তন উপযোগী হবে ৷ বরেন্দ্র অঞ্চলের গভীর নলকূপের আওয়তায় সেচের পানি ব্যবহার করে কৃষকরা সঠিক নিয়ম অনুসারে সেচে সুফল পাচ্ছেন।

এছাড়া চলতি মৌসুমে বিদ্যুৎ লোডশেডিং এর কোন সুযোগ নেই। গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ (কালবৈশাখি ঝড়) না হলে, এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। এতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, উচ্চ ফলনের প্রাপ্তির জন্য চাষিদের সার বীজ সহ নানাভাবে কৃষি তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করে আসছি আমরা। আগাম ধানের চারা রোপন করায় আবহাওয়া অনুকূলে আসলে ধান কর্তন আরম্ভ হবে। তবে কিছুদিনের মধ্যে এই উপজেলায় পুরোদমে ধান কর্তন শুরু হয়ে যাবে ৷

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শামছুল হক বলেন, রাজশাহী জেলায় কোন শ্রমিক সংকট নেই ৷ অপর দিকে এই জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন হাওড় অঞ্চলে শ্রমিক কৃষি বিভাগের উদ্যোগে পাঠানো হয়েছে ৷

তিনি আরো বলেন , করোনা ভাইরাসের মধ্যেও কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠে থেকে কৃষকদের নানাভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে ৷ বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার ৫০% ভর্তুকি মূল্যে যে কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়েছেন তাতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে খুব তাড়াতাড়ি কৃষকরা সহজেই ধান কর্তন এবং ঝাড়াই মাড়াই সহ ঘরে তুলতে পারবেন। ধান তোলা সম্পন্ন হলে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের দেশ খাদ্য সংকটে পড়বে না বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

This post has already been read 3267 times!

Check Also

কলাপাড়ায় পাটজাতীয় ফসলের আঁশ ও বীজ উৎপাদন বিষয়ক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিজেআরআই উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল পাট ও পাটজাতীয় ফসলের আঁশ …