আশিষ তরফদার (পাবনা) : পাবনা ঈশ্বরদীর পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত স্বল্পমেয়াদি ও খরা সহিঞ্চু আউশ ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত বিনা ধান-১৯ এর প্রচার ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে শস্য কর্তন ও মাঠ দিবস ঈশ্বরদী উপজেলার উমিরপুর গ্রামে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঈশ্বরদী পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট ও ঈশ্বরদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত শস্য কর্তন ও মাঠ দিবসে ঈশ্বরদী বিনা উপকেন্দ্রের এসএসও এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুশান চৌহান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট(বিনা) মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বিনা) পরিচালক (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) কৃষিবিদ ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, পাবনাস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: আজাহার আলী ও ঈশ্বরদীর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো.আব্দুল লতিফ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ঈশ্বরদী উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. খান জাহান আলী বলেন, বিনা’র উদ্ভাবিত বিনা ধান-১৯ জাতটির জীবনকাল ৯০-১০৫ দিন হওয়ায় কৃষকদের জন্য আউশ মৌসুমে এর চাষ খুবই উপযোগী। জাতটি স্বল্প মেয়াদী ও খরা সহিঞ্চু উচ্চ ফলনশীল, পানি ও সার সাশ্রয়ী, চাউল চিকন, ভাত সুস্বাদু এবং অন্যান্য ধানের চাইতে এটি স্বল্প মেয়াদী হওয়ায় যথাসময়ে এর আবাদ দ্রুত করা সম্ভব বলে তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
প্রধান অতিথি মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, বিনা’র উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণে কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে প্রর্দশনী ও মাঠ দিবসের মাধ্যমে সম্প্রসারণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আউশ মৌসুমে কমপক্ষে মোট জমির ১৫/২০ শতাংশ জমি আবাদ বৃদ্ধি করতে হবে, এ মৌসুমে ধান আবাদ করলে একদিকে খরচ কম হবে, কৃষকেরা লাভবান হবে এবং অন্যদিকে পানি অপচয় কম হবে। তিনি আরো বলেন, বৈশিষ্ট্যগত কারণে অন্যান্য ধানের চাইতে স্বল্পমেয়াদি ও খরা সহিঞ্চু উচ্চ ফলনশীল এবং ফলন আশাব্যঞ্জক হওয়ায় কৃষকের জন্য এ জাতের ধান চাষ খুবই লাভজনক বলে উপস্থিত কৃষক-কিষানীদের এর আবাদ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তাগণ বিনা ধান-১৯ জাতটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট সম্পর্কে বলেন, আউশ মৌসুমে ধান চাষে জীবন কাল স্বল্প মেয়াদী হওয়ায় জমিতে ২০-২৫দিন বয়সের চারা রোপন করা যায়। বৃষ্টি নির্ভর অবস্থায় সরাসরি সারিতে বপন ও রোপন উভয় পদ্ধতিতে চাষ করা উপযোগী । এ জাতে ধান আবাদে স্বাভাবিক ভাবে কোন সেচের প্রয়োজন হয় না। সঠিক ভাবে যত্ম-পরির্চাযা নিলে গড় ফলন হেক্টরে ৫.০ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। বিনা ধান-১৯ জাতটির আবাদ বাড়ানোর জন্য বক্তাগণ উপস্থিত কৃষক-কৃষাণীদের অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানের আগে কৃষক মো. জুয়েল রানার জাত প্রদর্শণী প্লটের ধান আগত চাষীদের দেখানো হয় এবং প্রদর্শণী প্লটের ধান নমুণা কর্তন করে ঝাড়াই-মাড়াই শেষে হেক্টর প্রতি প্রায় ০.৫ মে.টন ফলন রেকর্ড করা হয়। আগত চাষীদের সকলেই এ জাতটি আবাদের সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং দ্রুত বীজ সরবরাহের আবেদন জানান। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিনা উপকেন্দ্রর কর্মকর্তাবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবং প্রায় শতাধিক কৃষক/কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।