নিজস্ব প্রতিবেদক: গিনেজ বুকে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পথে রয়েছে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ নামক কার্যক্রম ।এর মাধ্যমে মূলত শস্যের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হবে । শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন এ কার্যক্রমের আহ্বায়ক ও প্রধান সমন্বয়ক এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ হ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
ধানের চারায় জাতির পিতার চিত্র ফুটিয়ে তোলার কাজ চলছে বগুড়ার শিবগঞ্জের শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে। যা ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্য চিত্র’ হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান করে নিতে পারবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। মতবিনিময় সভায় কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দসহ শষ্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত কৃষি সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আ হ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা এ কার্যক্রম অনেক আগে শুরু করেছি। বিদেশ থেকে বীজ এনেছি। গিনেজ কর্তৃপক্ষ নির্দেশিত পথে আমরা চলছি। পূর্বের সকল রেকর্ড সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। আমাদের আয়োজন বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং কোনো নেতার প্রথম এতবড় মুখচ্ছবি। বিশ্ববাসীর কাছে আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ আয়োজন স্মরণীয় করে রাখতে চাই। আমরা মুজিববর্ষে সেরা প্রোগ্রাম করতে চাই। বঙ্গবন্ধু যে প্রান্তিক মানুষের নেতা, ক্ষুধামুক্ত জনগণের নেতা, সেটা প্রমাণ করতে চাই।
তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুকে সারা বিশ্বে তুলে ধরতে চাই। বঙ্গবন্ধু মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। তিনি তৃণমূলের প্রান্তিক মানুষের কথা বলতেন। তার জন্মশত বর্ষে এটা শ্রেষ্ট কর্ম হবে বলে আমি মনে করি। কারণ ২০১৯ সালে চীনে গড়া হয়েছিল ৭৫ বিঘা জমিতে একটি শস্যচিত্র, যার আয়তন ছিল ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট। আর বগুড়ার শেরপুরের বালিন্দার শস্যচিত্রের আয়তন দাঁড়াচ্ছে ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট। মোট ১২০ বিঘা জমি ভাড়া নিয়ে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গড়ে তোলা হচ্ছে। মূল শিল্পকর্মের ক্যানভাস গড়া হচ্ছে ১০০ বিঘা জমিজুড়ে। এ ধরনের এত বড় শস্যচিত্র বিশ্বের আর কোনো স্থানে হয়নি। শস্যর ক্যানভাসে জাতির পিতার মুখচ্ছবি ফুটিয়ে তুলতে দুধরনের ধানের চারা ব্যবহার হচ্ছে। এখান থেকে প্রায় তিন হাজার মণ ধান পাবো। এই ধান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডারে দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, ধানের চারা চীন থেকে নেওয়া হয়েছে। বেগুনি ও সবুজ রঙের দুই ধরনের হাইব্রিড ধানের চারা উৎপাদন করা হয়েছে। চারা রোপনের পর থেকে ধান পাকার আগ পর্যন্ত নানা রূপ ধারণ করবে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’। ১৪৫ দিনে এই ধান ঘরে ওঠবে। একটি সবুজাভ সোনালি আর অন্যটি বেগুনি রঙের। সেই সঙ্গে রচিত হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি নিয়ে এক নতুন ইতিহাস।
ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার জানিয়েছে, বিএনসিসির ১০০ জন সদস্য এবং ৫০ জন শ্রমিক-কর্মচারী বৃহস্পতিবার চারা রোপণ সম্পন্ন করেছেন। এসব কার্যক্রমে খরচ হবে প্রায় দেড় কোটি টাকা। চীন থেকে বেগুনি ধান এবং দেশীয় সবুজ জনকরাজ ধানের চারা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব দৃশ্যমান করা হবে। ধান পাকার পর গোঁফ, চোখ, চুল, ভ্রু খয়েরি আর অন্য অংশ সোনালী রঙের হবে। উপর থেকে মাঠের মধ্যে স্পষ্ট প্রতিকৃতি দেখা যাবে। আগামী দশ দিন পর থেকেই অনেকটা দৃশ্যমান হবে মুখচ্ছবিটি।
উল্লেখ্য, ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ৮ লাখ টাকা ব্যয় করে জমি লিজ নেওয়া হয়েছে।