রাজেকুল ইসলাম (নওগাঁ): নওগাঁ জেলায় সৌখিন কবুতর খামারের সংখ্যা বাণিজ্যিকভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বদলগাছী উপজেলা সদরের জাহাঙ্গীর আলম বাণিজ্যিকভাবে সৌখিন কবুতর পালন করে সংসারের অভাব অনটন থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
জানাগেছে, বদলগাছি উপজেলা সদরের জিয়ল এলাকার ওই যুবক বাড়িতে মাত্র ৫টি সৌখিন কবুতর নিয়ে শুরু করেন কবুতর পালন। সেই কবুতর থেকে এখন তার একটি পূর্ণাঙ্গ খামারে রয়েছে ৫শ কবুতর। সিরাজী, লাক্কা, বিউটি, ম্যাকপাই, জার্মানী শীল, লালচিলা, হাউজ প্রিজন, বারামবাগ, ময়নাকাড়ি, কালো বেরিয়ার, হলুদ বার্ক হোমার, বাগদাদ, ককা, আউল, হলুদ সিরাজী, কালো সিরাজী, লাল সিরাজীসহ প্রায় একশ জাতের দামী দামী কবুতর রয়েছে তাঁর এই খামারে। বাড়ির দু’টি ঘরে সারি সারি খাঁচা। মোট একশ’টি খাঁচায় এসব কবুতর শোভা পাচ্ছে। কবুতরের বিভিন্নরকমের ডাকে মুখরিত হয়ে রয়েছে পুরো বাড়ি। বাড়ির কাছাকাছি গেলেই এসব কবুতরের ডাক শোনা যাবে। কোন খাঁচায় ডিম, কোন খাঁচায় সদ্য প্রস্ফুটিত বাচ্চা আবার কোন খাঁচায় বেড়ে উঠা বাচ্চা দেখা যাচ্ছে। মা কবুতর নিজেদের খাবার পাশাপাশি বাচ্চাদের খাওয়াতে ব্যস্ত। মায়ের মমতায় ভরা এ এক অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। খামারটি এখন বেশ লাভজনক। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন এই খামারি।
খামারি জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রতিদিন গম, ভুট্টা, হিন্টি, সরিষা, মসুর ইত্যাদি খাবার হিসেবে দেয়া হয় এসব কবুতরকে। আর খাবার দিয়ে নানাভাবে পরিচর্যা করে পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে সময় কাটাচ্ছে খামারির কলেজ পড়ুয়া পুত্র। এ কাজে সহযোগিতা দিয়ে আসছেন তার স্ত্রীও।
প্রতিবেশীসহ এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে কবুতর প্রেমীরা এই কামার দেখতে আসেন। দেখে খুশি হন। এমনকি এই খামারের লাভের কথা শুনে নিজেরাও খামার গড়তে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন অনেকেই। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সৌখিন কবুতরপ্রেমীরা এই খামারে কবুতর ক্রয় করতে আসেন। পুলিশ বিভাগের অনেক কর্মকর্তা তার এই কবুতরের খামার থেকে বাচ্চা এবং বড় কবুতর ক্রয় করে থাকেন। এই খামার থেকে ১০ হাজার থেকে ৩০হাজার টাকা পর্যন্ত এক জোড়া কবুতর বিক্রি হয়ে থাকে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন জানান এসব সৌখিন কবুতর পালন অত্যন্ত লাভজনক। কবুতর পালন করে যে কারো সংসার নির্বাহ করা সম্ভব। এসব খামার গড়ে তুলতে আগ্রহী তাদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদানসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত প্রাণিসম্পদ বিভাগ। হাঁস-মুরগির খামারের মত এসব সৌখিন কবুতরের খামার গড়ে তুলে একদিকে যেমন শখ মেটানো এবং পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়া সম্ভব বলেও তিনি জানান।