মো. জুলফিকার আলী (পাবনা) : দেশের তেলের চাহিদা পূরণ এবং ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমানো লক্ষ্যে উচ্চ ফলনশীল খাটো জাত বারি সূর্যমুখী-৩ আবাদ লাভজনক। ফসলটিতে বিঘাপ্রতি ৫-৬ হাজার টাকা ব্যয় করে সব খরচ বাদ দিয়ে নুন্যতম ১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়।
শনিবার (২৭ ফেরুয়ারি)মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে আইএমইডি টিম কর্তৃক বৃহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মেহেরপুর পৌরসভায় উচ্চ ফলনশীল খাটো জাত বারি সূর্যমুখী -৩ এর মাঠ দিবসে উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন। ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমানো, অধিক উৎপাদনশীল ও উচ্চ ফলনশীল খাটো জাত বারি সূর্যমুখী -৩ এর বহুল প্রচার ও চাষিদের মাঝে -এর আবাদ কৌশল জনপ্রিয় করাই ছিল এই মাঠ দিবসের মূল উদ্দেশ্য।
মাঠ দিবসে মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ স্বপন কুমার খাঁ -এর সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফসল অনুবিভাগ, কৃষি,পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশনের যুগ্ম প্রধান (যুগ্মসচিব) এম. জালাল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মো. রুহুল কবির, ঢাকাস্থ খামারবাড়ির পরিকল্পনা, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও আইসিটি উইং উপপরিচালক (প্রকল্প মূল্যায়ন ও মনিটরিং) কৃষিবিদ মো. শেখ ফরিদ ও কৃষি অর্থনীতিবিদ কৃষিবিদ রেহানা সুলতানা, অত্র প্রকল্পের অতিরিক্ত উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ) কৃষিবিদ মো.আব্দুল্লাহ আল মামুন ও অতিরিক্ত উপপরিচালক (সম্প্রসারণ ও সমন্বয়) কৃষিবিদ মো. সেলিম হোসেন, মেহেরপুর ডিএই অতিরিক্ত উপ পরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম কামরুজ্জামান, গাংনীর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কে এম শাহাবুদ্দিন আহমেদ, মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নাসরিন পারভিন ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ দীপক কুমার সাহা।
মাঠ দিবসে মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নাসরিন পারভিন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বারি সূর্যমুখী- ৩ জাতটি খাটো, জীবনকাল ১০০-১১০দিন। জাতটি ২০১৯ সনে অবমুক্ত হয়। বিঘাপ্রতি ৫-৬ হাজার টাকা ব্যয় করে সব খরচ বাদ দিয়ে নুন্যতম ১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়। উচ্চমানের পুষ্টিগুণসম্পন্ন তেল ছাড়াও বীজ পাখির খাদ্য ,খড় জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা যায়। বীজ সংরক্ষণের মাধ্যমে জাতটি সম্প্রসারণ করা হবে, যাতে হাইব্রিড বীজ ক্রয়ে কৃষক পর্যায়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় না হয়। প্রতি শতকে বারি সূর্যমুখী- ৩ এক মণের (৪০ কেজি) বেশি ফলন দিতে সক্ষম। কৃষকের জন্য এ জাতের সূর্যমুখী চাষ খুবই লাভজনক বলে উপস্থিত কৃষক-কিষানীদের এর আবাদ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান।
প্রধান অতিথি এম জালাল আহমেদ বলেন, দেশের তেলের চাহিদা পূরণ এবং ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমানো লক্ষ্যে উচ্চ ফলনশীল খাটো জাত বারি সূর্যমুখী -৩ জাত সমূহ উদ্ভাবন করেছে যা চাষিদের জন্য খুবই লাভজনক। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কৃষকের আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে, যোগ করেন তিনি।
আলোচনার পূর্বে কৃষক মো. ইসলাম খানের প্রর্দশনী প্লটে অতিথিবৃন্দ ও এলকার আন্যান্য কৃষকদের এই উচ্চ ফলনশীল খাটো জাত বারি সূর্যমুখী-৩ চাষাবাদেও কৌশল, আন্তঃপরিচর্যা, ফসলের বাস্তব অবস্থা ইত্যাদি সরেজমিনে দেখানোর হয়। এ সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং প্রায় চারশতাধিক কৃষক কৃষানী উপস্থিত ছিলেন।