নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতেই আলোড়ন তুলেছে, সারা পৃথিবী উদযাপনে সামিল হয়েছে। বিশ্বের যেসব দেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে নি, স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন দেয় নি বরং বিরোধিতা করেছে; সেসব দেশও এই উদযাপনে সামিল হয়েছে, বাংলাদেশকে ‘বিশ্বে উন্নয়নের উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। অথচ স্বাধীনতাবিরোধী, পাকিস্তানের এ দেশিয় দোসর- সহযোগী ও ধর্মান্ধরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপনকে ভণ্ডুল ও কালিমালিপ্ত করার জন্য অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। এই ধর্মান্ধদের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ দেশ থেকে ধর্মান্ধদের মূলোৎপাটন করতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী রবিবার (২৮ মার্চ) ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সম্প্রতি ২০ নাগরিকের দেয়া বিবৃতি প্রসঙ্গে ড. রাজ্জাক বলেন, বিএনপি, জামাত ও ধর্মান্ধরা যখন প্রতিবাদের নামে জ্বালাও পোড়াও, জনগণ ও সরকারি সম্পদ নষ্টসহ সাধারণ নাগরিকের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে তখন এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা সবসময়ই নিরব থাকেন। ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নিয়ে আসা হয়েছে। কোন স্বৈরাচারকে নিয়ে আসা হয় নি। এটা নিয়ে ধর্মান্ধরা দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতিবাদের নামে জ্বালাও পোড়াও, জনগণ ও সরকারি সম্পদ নষ্টসহ সাধারণ নাগরিকের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। এ ধরণের আন্দেলন ও প্রতিবাদের অধিকার দেশের কোন নাগরিকের নেই। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার সকল নাগরিকের রয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান। অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ। মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বরেণ্য ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতাপাঠ করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, অর্থনীতির সকলক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কৃষিতে এখনও অনেক সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলোকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, দেশে দুটি শক্তি বিরাজমান। একটি উন্নয়নের পক্ষে আরেকটি ধ্বংসের পক্ষে। যারা দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারাই আজ এ দেশের উন্নয়নের বিপক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আগামী প্রজন্ম যেন উন্নত রাষ্ট্রে নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দ্যে বাস করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদেরকে কাজ করতে হবে।
ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, কৃষিতে অভাবনীয় সাফল্যের কারণেই দেশে খাদ্য সংকট নেই। স্বাধীনতার পর সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ছিল না। চাহিদা মেটাতে হতো বিদেশ থেকে আমদানি করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৬ কোটির বেশি হলেও দেশে উদ্বৃত্ত খাদ্যের মজুদ রয়েছে। তবে অনুৎপাদনশীল খাতে বাজেট কমিয়ে উৎপাদনশীল কৃষিখাতে বাজেট আরো বৃদ্ধি করলে কৃষিখাতে আরও উন্নয়ন হবে। তিনি আরও বলেন, কৃষিবিদদের জন্য স্বতন্ত্র পে স্কেল হওয়া উচিত।