নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের খামারিদের কখনো ছোট না ভাবার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।
বুধবার (২৩ জুন) সাভারের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) প্রাঙ্গণে ইনস্টিটিউ আয়োজিত ‘খামারি মাঠ দিবস ২০২১’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী তিনি এ আহ্বান করেন। বিএলআরআই-এর ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ ও উন্নয়ন গবেষণা প্রকল্পের আওতায় এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ খাতের খামারিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “দেশের প্রান্তিক অঞ্চলের অসহায় মানুষরা কেউই বিপন্ন অবস্থায় থাকবেনা। নিজেদের কখনো ছোট ভাববেন না। আপনারা নিজ উদ্যোগে স্বাবলম্বী হোন। সরকার আমাদের পাশে আছে। করোনায় বিপর্যস্ত খামারিদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। আরো প্রণোদনা দেওয়া হবে। সহজশর্তে স্বল্পসুদে ঋণ দেয়া হবে। দেশের উন্নয়নে আপনাদের অবদান কোন অংশে কম নয়।”
প্রাণিসম্পদ খাতে টিকা সমস্যাসহ অন্য যেকোন সমস্যা থাকলে তা সমাধান করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী যোগ করেন, প্রাণিসম্পদের যে রোগের কারণে খামারিরা শঙ্কায় থাকে, মাংস বিদেশে রপ্তানি করা যায় না, সে রোগগুলো নির্মূল করা হবে। সে লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ করছে। প্রাণিসম্পদ খাতে গৃহীত প্রকল্প গ্রামীণ নারীসহ দরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলছে। তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, বেকারত্ব দূর হচ্ছে এবং উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। দেশের উন্নয়নে প্রান্তিক মানুষ অবদান রাখছে। এভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্রসরমান বাংলাদেশ নির্মাণে এগিয়ে চলেছেন।”
মন্ত্রী আরো বলেন, “যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, যতদিন বাঙালি জাতি থাকবে, যতদিন এই ভূখণ্ডে লাল-সবুজের পতাকা উড়বে, ততদিন আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা চিরঞ্জীব হয়ে থাকবে। ক্রান্তিকালে বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিতে হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে। আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পাওয়ার পর বাংলার পথে-প্রান্তরে তিনি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণা করে মানুষকে বুঝিয়েছেন ছয় দফা হচ্ছে আমাদের মুক্তি, আমাদের স্বাধীকার, আমাদের অধিকার আদায়ের ম্যাগনাকার্টা। অপরদিকে শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেছেন, পুনরুজ্জীবিত করেছেন। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।”
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য খাতকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী যোগ করেন, “এ খাতকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু তখন পরিকল্পনা করেছিলেন। সে সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের বিকাশের কথা বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টিই প্রমাণ করে দেশের উন্নয়নের স্বার্থ বিবেচনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ গৌণ কোন খাত নয়।”
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ্ মো. ইমদাদুল হক ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ শেখ আজিজুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএলআরআই-এর অতিরিক্ত পরিচালক মো. আজহারুল আমিন।
মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিএলআরআই ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীগণ, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং প্রাণিসম্পদ খাতের খামারিগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।