রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪

দেশের বেসরকারি খাতে নতুন দরজা খুলেছে আফতাব – মৎস্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক

শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত ‘ডিজিটাল ফিড সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড কল সেন্টার ফর অ্যাকোয়াকালচার’ শীর্ষক আ্যাপস ও কল সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ।

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বেসরকারি খাতে নতুন দরজা খুলেছে আফতাব। শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত ‘ডিজিটাল ফিড সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড কল সেন্টার ফর অ্যাকোয়াকালচার’ শীর্ষক আ্যাপস ও কল সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উক্ত মন্তব্য করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে আফতাব ফিড প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং ওয়ার্ল্ড ফিস। এ সময় তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অন্যান্য মৎস্য সেক্টরের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএইড বাংলাদেশ -এর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট মোহাম্মদ সৈয়দ শিবলী, সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন ওয়ার্ল্ড ফিশ (সাউথ এশিয়া) রিজিওনাল ডিরেক্টর মি. ক্রিস প্রাইস, বাংলাদেশ অ্যাকোয়া কালচার এক্টিভিটি (ওয়ার্ল্ড ফিশ) এর চীফ অব পার্টি ড. মঞ্জুরুল করিম, আফতাব ফিড প্রোডাক্টস লিমিটেড -এর নির্বাহী পরিচালক এটিএম হাবিবুল্লাহ, প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সোর্স ট্রেস -এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রাশেদ আলম, এগ্রো সল্যুশন -এর প্রধান নির্বাহী অং তুং ওয়ে এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

কাজী শামস আফরোজ বলেন, দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদায় একটা সময় মাছের উৎপাদন বাড়ানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল। কিন্তু বর্তমানে আমরা উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপদ মাছ উৎপাদনের দিকে সজাগ দৃস্টি রাখছি। সেজন্য আমরা অত্যাধুনিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছি যাতে মাছের ক্ষতিকর ভারী ধাতু বা এন্টিবায়োটিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা যায়।

ফিডের দামের বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ফিডের দাম কমাতে হলে সবার আগে আমাদেরকে কাঁচামালের উৎপাদন খরচ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। ফিড তৈরির বেশিরভাগ কাঁচামাল যেহেতু আমদানি নির্ভর তাই ভুট্টা ও সয়াবিনের মতো মূল উপকরণগুলো দেশেই অধিক উৎপাদনের দিকে জোর দেয়া জরুরি।

অনুষ্ঠানে আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান বলেন, আফতাব কৃষি পরিবারের পণ্য তালিকা হতে পোল্ট্রি খাদ্য, গবাদিপশু খাদ্য, মাছের খাদ্য, উন্নত জাতের মুরগির বাচ্চা ও মাছের পোনা সংগ্রহ করে দেশের কৃষকেরা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

তিনি বলেন, আফতাব ফিড প্রোডাক্টস উৎপাদিত পণ্য বর্তমানে দেশের বাহিরে রপ্তানি হচ্ছে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে দেশকে সহায়তা করছে। আফতাব ডিজিটাল আ্যাপস ও কল সেন্টার বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিরিরমানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ইউ্এসএআইডি, ওয়ার্ল্ড ফিশ এবং আফতাব ফিড প্রোডাক্টস যৌথভাবে উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে আফতাব ফিড এর পুরো সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টকে ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হবে। এর মাধ্যমে ডিলার/সাব-ডিলার/চাষী/এলএসপি সরাসরি তাদের প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী আ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ক্যাটালগ দেখে দেখে ফিড এর জন্য অর্ডার করতে পারবে। কিছুটা অনলাইনে কেনাকাটা করার মতো করে খাদ্য ক্রয় করা যাবে।

আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান জানান, আফতাব কল সেন্টার (আফতাব কৃষি সার্ভিস) এর মাধ্যমে যে কোন চাষী দেশের যে অ্যাপস তৈরি করে দেবে যা গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যাবে। গুগল প্লে-স্টোর থেকে আ্যাপসটি ডাউনলোড করে এটি যে কোন সেবা নিতে পারবে। অন্যদিকে, এখো সল্যুউশন নামক প্রতিষ্ঠানটি আফতাবের কল সেন্টার সার্ভিস এর কাজটি করবেন যার মাধ্যমে চাষীরা তাৎক্ষণিক তাদের চাষ সংক্রান্ত যে কোন সমস্যার সমাধান পাবেন। এ সময় তিনি প্রকল্পটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ অ্যাকোয়া কালচার এক্টিভিটি (ওয়ার্ল্ড ফিশ) এর চীফ অব পার্টি ড. মঞ্জুরুল করিম বলেন, মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উচু করে দাড়ানোর মতো অবস্তানে আছে। বাংলাদেশের মৎস্য উন্নয়নে ওয়ার্ল্ড ফিস ৩৫ বছর ধরে কাজ করছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে মাছ চাষের উন্নয়ন হয়েছে মূলত কমার্শিয়াল চাষিদের মাধ্যমে। প্রান্তিক ও ছোট খামারিদের ভাগ্যের তেমন পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশে মাছের দাম তেমন বাড়েনি, লাভের মূল অংশ নিয়ে যায় মধ্যসত্বভোগীরা। উৎপাদন খরচ কমাতে হলে ফিড তৈরির মূল উপকরণগুলো দেশেই উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। এ সময় তিনি যে কোন ক্ষেত্রে গবেষণায় জোর দেয়ার আহ্বান জানান্।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে আফতাব ফিড প্রোডাক্টস লিমিটেড -এর নির্বাহী পরিচালক এটিএম হাবিবুল্লাহ বলেন, দেশের প্রান্তিক খামারিগণ যাতে জেনে বুঝে মাছ চাষ করতে পারেন এবং অধিক লাভবান হতে পারেন সে উদ্দে্শ্যকে সামনে রেখেই আমরা আ্যাপস ও কল সেন্টারের উদ্যোগ নিয়েছি। ডিজিটালি আমরা যত এগিয়ে যাবো, আমাদের কাজ তত বেশি সহজ হবে। মাছ চাষিদের বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য কল সেন্টার চালু করা হয়েছে। অ্যাপসটি খুব শীঘ্রই বাংলায় কনভার্ট করা হবে বলে এ সময় জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে এগ্রো সল্যুশন -এর প্রধান নির্বাহী অং তুং ওয়ে এবং সোর্স ট্রেস -এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রাশেদ আলম যথাক্রমে কল সেন্টার ও অ্যাপস এর খুঁটিনাটি বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন। এছাড়াও আগত অতিথিদের কল সেন্টার ও অ্যাপস বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংশ্লিষ্টগণ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আগত প্রধান, বিশেষ ও সম্মানিত অতিথিদের ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানায় আফতাব ফিড প্রোডাক্টস লিমিটেড।

সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড -এর সিনিয়র ম্যানেজার (এডমিন অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) মো. মামুনুর রহমান।

This post has already been read 4404 times!

Check Also

হাওরে ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘আমি মনে করি, হাওরে ইজারা …